Amazon Online Store

Blog Archive

Total Pageviews

Tuesday, May 12, 2020

শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র কি ভগবান?


শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ভগবান এটা কি সত্য না মিথ্যা?



শ্রীশ্রী ঠাকুর বলেছেন,যিনি সর্বাবস্থায় মানুষের মঙ্গল কামনা করেন,কখনও কারও প্রতি অন্যায় করেন না, কোন অবস্থাতেই কারও অমঙ্গল কামনা করেন না- তিনি মানুষের ভগবান।




যুগপুরুষোত্তম,পরমপ্রেমময়, ভগবান, নররূপীনারায়ন ,আপূরীয়মান,বৈশিষ্ট্যপালী শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও তার পরিবার।



শ্রীশ্রী ঠাকুর এক মহাসংকটময় অবস্থায় আমাদের উদ্ধারের জন্য পৃথিবীতে এসেছেন। মানুষের মন থেকে অধর্মভাব দূরীভূত করে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করার জন্য তিনি ধরাধামে আবির্ভূত হয়েছেন। ভাগবত পুরাণের ১০৬৭ পৃষ্ঠায় শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূল অর্থাৎ কল্কি অবতারী আসার ব্যাপারে বলা হয়েছে।
ভাগবত পুরানের ১০৬৭ পৃষ্ঠায় ঠাকুরের আবির্ভাবের ব্যাপারে বলা আছে।
অবতার হবে পুন দেব নারায়ন
সাধুগনে পরিত্রাণ করিবেন তখন।
ব্রাহ্মনের শিরোমনি বিষ্ণুযশা নাম
সম্বলপুরেতে যথা মনোহর গ্রাম।
কল্কিরূপে অবতার হবে দয়াময়
অষ্টৈশ্বর্য গুনান্বিত জানিবে নিশ্বয়।
দেবদত্ত অশ্বে তিনি করে আরোহন
সকল ধরণী সুখে করিবেন ভ্রমন।
পাবনার হিমাইতপুর গ্রামের পূর্ব নাম ছিলো সম্বলপুর। ঠাকুরের মায়ের কুষ্ঠীর নাম ছিলো বিষ্ণুযশা। এছাড়াও বিষ্ণুযশা মানে যিনি বিষ্ণুর সেবক। ঠাকুরের মা মাতা মনমোহিনী দেবী ছিলেন একজন বড় মাপের সাধিকা। তিনি ছোটবেলায় সাধনার দ্বারা বিষ্ণুমন্ত্রে দীক্ষা লাভ করেন। সেই সাধিকা মনোমহিনীর গর্ভে, পিতা শিবচন্দ্রের ঘরে মায়ের কোল আলো করে এলেন পরমেশ্বর শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র। শ্রীশ্রী ঠাকুর ১২ মাস মায়ের গর্ভে থেকে তারপর ধরাধামে ভূমিষ্ট হন। জন্মের পর ভোরবেলায় মা ও দাই মা ঘুমিয়ে পড়লেন কখন যে শিশু ভূমিষ্ট হয়ে গেল বুঝতেই পারলেন না। মায়ের কোন প্রসব কষ্ট হলো না। জন্মের পর পর ঠাকুরের শরীর থেকে দিব্য জ্যোতি বের হতে লাগলো। এই আলো সকালের উদিত সূর্যের কিরণের মত। সেই ছোট্ট শিশুটির শরীরের আলোতে চারদিক আলোকিত হয়ে গেল। শ্রীশ্রী ঠাকুরে বাড়ি ছিল পদ্মার পাড়ে। পদ্মা নদীতে জেলেরা ভোরে ভোরে মাছ ধরছিল তারা দেখল চক্রবর্ত্তী বাড়িতে আগুন লেগেছে। তারা মাছ ধরা ফেলে নৌকা বাইতে বাইতে দৌড়ে এল। যতই তারা কাছে আসে ততই আলো কমতে থাকে। এ কেমন আলো। তারা শিবচন্দ্রের বাড়ি এসে অবাক হয়ে গেল। একি দেখল তারা ! এক দিব্য শিশু সদ্য জন্ম নিয়েছে তার অঙ্গ থেকে জ্যোতি বের হচ্ছে। তার জ্যোতির স্নিগ্ধ আভায় চারদিক আলোকিত হয়ে গেল। সবাই শঙ্ক ধ্বনি দিচ্ছে ,মায়েরা ঊলুধ্বনি দিচ্ছে। এতো সাধারন শিশু নয়। চমৎকার তার হাসি। যে দেখে সে চোখ ফিরাতে পারে না। একি দেখল সে। যেন শুধু দেখতেই ইচ্ছে করে। নয়নভুলানো তাঁর রূপ, ভুবনভুলানো হাসি। ধরাধামে এসেই সবার মন জয় করে নিলেন। শ্রীশ্রী ঠাকুরের দিব্য লীলা জন্মকাল থেকেই শুরু। শ্রীশ্রী ঠাকুর হলেন অবতারী যিনি অবতারদের প্রেরন করেন এবার স্বয়ং তিনি এসেছেন লীলা করতে ,পাপী তাপীদের উদ্ধার করতে।

তখন থেকে ঠাকুরের জীবনে প্রতিটি মুহূর্ত তিনি আশ্চর্য লীলা করেছেন। তিনি এমন মানব যাকে কোন মাপকাটিতে মাপার জো নেই। তিনি স্বয়ং ভগবানরূপে এসেছেন মানুষকে উদ্ধারের জন্য। মানুষের মাঝে সত্যকে প্রচারের জন্য। ঠাকুর কল্কি অবতারীরূপে এসে সত্যকে প্রতিষ্ঠায় ব্রতী হলেন। তিনি তাঁর জ্ঞানসুধা দিয়ে, ভালোবাসা দিয়ে, কীর্ত্তন দিয়ে, দৈবী ব্যক্তিত্ব দিয়ে ঠাকুর মানুষের প্রাণপ্রিয় সংগঠন সৎসঙ্গ প্রতিষ্ঠা করলেন। সৎসঙ্গ হলো মানুষ গড়ার কারখানা। তাই সৎসঙ্গ আজ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে মানুষকে সৎ পথে আনার জন্য, সদদীক্ষায় দীক্ষিত করার জন্য। তিনি ধর্মযাজকরূপে ঋত্বিক সম্প্রদায় সৃষ্টি করলেন। ঋত্বিকরা হলো ঠাকুরের শ্বেত অশ্ব। তারাই ঠাকুরের আদর্শকে পৃথিবীর এই প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্তে বয়ে নিয়ে বেড়ান।



শ্রীকৃষ্ণ শ্রীমুখে গীতায় বলেছেন , তিনি যুগে যুগে আসেন। তিনি যুগে যুগে বিভিন্নরূপে ভগবানরূপে আবির্ভূত হন। মানুষকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য। ধর্ম সংস্থাপনের জন্য। তিনিই সেই একই ব্যক্তি। তিনি নতুনরূপে এসে নব নব বিধান,যুগমাফিক বিধান দিয়ে যান। তাইতো তিনি যখন নবরূপে আসেন নববিধান নিয়ে আসেন। সেই নববিধানকেই সবার গ্রহন করতে হয়। যারা এই নববিধানকে অস্বীকার করেন তাদের দুর্গতি বাড়ে। তারা বাস্তবের সাথে খাপ খাওয়াতে পারেন না।




যেমন ধরুণ-আগে ২জি নেটওয়ার্ক ছিল সেটা আমরা ব্যবহার করতাম। তখনকার জন্য ওটাই বেস্ট ছিল। আবার যখন প্রযুক্তির উন্নয়নে ৫জি আসল আমরা এখন ৫জি ব্যবহার করছি। কারন এখনকার জন্য ৫জিই সেরা নেটওয়ার্ক। এখন যদি কেউ বলে ৫জি ব্যবহার করবো না তাহলে তো তিনি পিছিয়ে পড়বেন। এটা হবে উনার সমস্যা আর কারো সমস্যা হবে না।




































হিন্দু নির্যাতনের কারন ও প্রতিকার সম্পর্কে জানুন.......






































শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে নিয়ে অনেকের মনে অনেক প্রশ্ন।ঠাকুর তো মানুষ রূপে এসেছেন তিনি ভগবান হন কেমন করে ?কৃষ্ণই একমাত্র ভগবান আর কেউ ভগবান হতে পারেন না। ঠাকুর বৃদ্ধ হয়েছেন ,ভগবান তো চির যৌবন থাকবেন ,তাই তিনি ভগবান হতে পারেন না।
দেখুন আমরা কাকে ভগবান বলছি-ভগবান শ্রীহরি,রাম,শ্রীকৃষ্ণ,শ্রীচৈতন্য,শ্রীরামকৃষ্ণ,শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে।
প্রথমত ভগবানের ছয়টি মূল বৈশিষ্ট্য থাকে।
বিষ্ণুপুরাণ-৬.৫.৭৯
“যিনি পরম ঐশ্বর্য, বীর্য, যশ, শ্রী, জ্ঞান ও বৈরাগ্য গুনযুক্তা তিনিই ভগবান”
এখানে নির্গুনা-পরাব্রহ্মা, হিরণ্যগর্ভা, পরমাত্মা, ভগবান এছাড়া সচ্চিদানন্দ, পরমপুরুষ, ঈশ্বরের গুণ কে মানব কল্যাণের উপর ভিত্তি করে ৬ টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

হিন্দু নির্যাতনের কারন ও প্রতিকার সম্পর্কে জানুন......
এছাড়া সংস্কৃত অভিধানে “ভগবান” এর “ভগ” শব্দের অর্থ – Fortune, Wealthy, Prosperity, Blessed. যেখানে –
Fortune= শ্রী
Wealthy= ঐশ্বর্য
Prosperity= বীর্য+যশ
Blessed= জ্ঞান+বৈরাগ্য
অথ্যাৎ তিনিই ভগবান যিনি মানব কল্যাণের জন্য – শ্রী দাতা, সকল ঐশ্বর্য দাতা, সকল প্রকার জ্ঞান দাতা, সকল প্রকার বীর্য ও যশ দাতা, যিনি সর্বদা ভোগ বিষয়ে অনাসক্ত(বৈরাগ্য) তিনিই ভগবান ।










ঠাকুরের এসব বৈশিষ্ট্যের সবগুলোই ছিলো। এছাড়া ঠাকুরের বত্রিশটি বৈশিষ্ট্য বর্তমান ছিলো। তাছাড়া ভগবান তো প্রত্যেকের মধ্যে আছেনই। তার মধ্যে হয়েছে ভগবত সত্তার পূর্ণ প্রকাশ। ঠাকুর কয়েকজনকে তার বিশ্বরূপ দর্শন করিয়েছিলেন। তার মধ্যে মাতা মনমোহিনী ও ভক্ত অনন্ত মহারাজ অন্যতম। আবার অনেকে তাকে বিভিন্নরূপে দেখেছেন। তিনি মাঝে মাঝে নিজেই ধরা দিয়েছেন ভক্তদের। তাঁর পরিচয় দিয়েছেন। তিনি সত্যবাদী ছিলেন,কখনও মিথ্যা কথা বলতেন না। তাঁর জীবন ছিলো চরম এক বিষ্ময়। তিনি অলৌকিক বলে কোন কিছু মানতেন না। তিনি বলতেন প্রত্যেকটা ঘটনার কোন কোন কারন আছে। আমাদের সাধারনের জানার সাধ্যের বাইরের কোন ঘটনাকে আমরা অলৌকিক বলে ভাবি। আমাদের ভ্রান্ত ধারনা এই যে,অলৌকিক কিছু না করলে তিনি ভগবান হতে পারেন না। আমাদের চরম এই ভুলটাকে তিনি ধরিয়ে দিয়েছেন বলেছেন ভগবানরা অনেক কিছু করেন যার কোন না কোন কারন থাকে কিন্তু আমরা কারন জানিনা বলে অলৌকিক মনে হয়। ঠাকুরের জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত কোন না কোন অলৌকিক ঘটনায় পূর্ণ। ঠাকুর অদ্ভুদ এক লীলা করে গেছেন কল্কিতে।









শ্রীশ্রী ঠাকুরের লাইভ ভিডিও দেখুন নিচের লিংক-এ
https://www.youtube.com/watch?v=8V5uc7A2BNU

শ্রীশ্রী ঠাকুর অষ্টাদশ ধাম দয়ালধামের নাম নিয়ে এসেছেন। তিনি ভক্তদের উদ্ধারের জন্য দিয়েছেন মহাশক্তিশালী এক বীজনাম। তিনি স্বয়ং পরমেশ্বর ভগবান। তিনি নিরাকার পরব্রহ্ম আবার সাকার ভগবান। তাকে ভক্তির মধ্যে দিয়েই কেবল বুঝা যায়। ভক্তরাই তাঁকে চিনতে পারে।
তাঁর লীলা পার্ষদরা তাকে কিছুটা চিনতে পারেন যেমন তিনি অর্জুনকে দিব্যজ্ঞানের মাধ্যমে শ্রীকৃষ্ণ বুঝিয়ে ছিলেন তিনি কে।
এটা সত্যি কথা যে ,ভগবানকে পরীক্ষা করতে গেলে শুধু ঠকে আসতে হবে কারন তাকে পরীক্ষা করার মত ক্ষমতা আমাদের নেই। তিনি অন্তর্যামী। তাকে পরীক্ষা করে সাধ্য কার। তবে নিজের পরিচয় তুলে ধরতে মাঝে মাঝে তিনি নিজেই ইচ্ছে করে ধরা দেন। মায়াচ্ছন্ন জীব পরমপুরুষকে কি করে বুঝবে। তিনি ভক্তের নিকট বাধা থাকেন। ভক্তরাই তাকে চিনতে পারেন।
ঠাকুরের ছোটবেলার একটি দিব্য লীলার কথা শুনুন।
শ্রীশ্রী ঠাকুর ছোট বেলায় খুব দুরন্ত ছিলেন। একদিন তিনি মায়ের সাথে গেলেন আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে। ওখানে দাদু নিত্য রাধাগোবিন্দের পূজা করেন। দাদু ঐদিনও যথারীতি স্নান সেরে পূজার যোগাড় করে ভোগ নিবেদন করে ধ্যানে বসেছেন কিছুক্ষণ পর তিনি কানে কি যেন টুং করে আওয়াজ শুনতে পেলেন। তার ধ্যান ভেঙ্গে গেল। তখন তিনি চোখ খুলে দেখেন আসনে রাধাগোবিন্দের মূর্তি ফেলে সেই ছোট্ট ঠাকুর আসনে বসে আসেন। দাদু তো রেগে মেগে আগুন। তিনি হায় হায় শুরু করলেন। একি করলে তুমি। আমার রাধামাধবের মূর্তি ফেলে দিয়ে তুমি বসে আছো? দুষ্টু ছেলে কোথাকার আমার আজকে পূজাটাই শেষ করে দিল। হে গোবিন্দ আমায় ক্ষমা কর। ঠাকুর এই দেখে মুচকি মুচকি হাসছেন। তারপর দাদু ঠাকুরকে টেনে হিচড়ে মা মনমোহিনীর কাছে নিয়ে গেলেন এবং বললেন দেখ মনো তোমার ছেলে কি করেছে। তিনি সবিস্তারে ঘটনা বললেন। সব শুনে মনমোহিনী ঠাকুরকে জিজ্ঞাসা করলেন -তুমি ওখানে কেন গেলে? ঠাকুর আধো আধো কথায় উত্তর দিলেন -তিনি আমায় ডাকে কেন? এটা প্রথমে কেউ বুঝতে পারে নি। মনমোহিনী বললেন কোথায় তোমায় ডেকেছেন? ঠাকুর উত্তরে বললেন- তিনি গোবিন্দ গোবিন্দ বলে ডাকছিলেন। আচ্ছা যাই হোক মা মনমোহিনী অনুকূলকে বকলেন এবং উনাকে বললেন আপনি আবার পূজার ব্যবস্থা করুন। এমনটি আর হবে না। দাদু আবার চলে গেলেন পূজার জোগাড় করতে। পুজার জোগাড় শেষ করে যেই তিনি ধ্যানে বসলেন কিছুক্ষণ পর আবার টুং করে শব্দ শুনতে পেলেন। আবার দাদু চোখ খুলে দেখলেন রাধামাধবের মূর্তি মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে আর ঠাকুর রাধামাধবের আসনে বসে আছেন আর মুচকি মুচকি হাসছেন। এবার দাদু আর রাগ সামলাতে না পেরে ঠাকুরকে যাচ্ছেতাই বকাঝকা করলেন আর ঠাকুরকে টেনে হিছড়ে মা মনমোহিনীর নিকট নিয়ে গেলেন এবং বললেন-এবারও হলো তো তোর ছেলে আবার আমার রাধাগোবিন্দের মূর্তি ফেলে দিয়ে নিজে গিয়ে আসনে বসে আছে। আমি এতকষ্ট করে পূজার জোগাড় করলাম সব নষ্ট করে দিলো। গোবিন্দ আমায় পাপ দিবেন। ভোগের সময় চলে যাচ্ছে আমি গোবিন্দকে শান্তিমত এই দুষ্টুটার জন্য ভোগ নিবেদন করতে পারলাম না। কি অনাচার! তুই তোর ছেলেকে কি করবি কর। আমার পূজার সব নষ্ট করে দিল। মা আবার রেগে ঠাকুরকে দুই এক ঘা দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন -তোমাকে বার বার নিষেধ করার পরও তুমি ওখানে কেন যাচ্ছ? ঠাকুর আবার বললেন -তিনি আমায় ডাকেন কেন? এবারও ঠাকুরের উত্তর কেউ বুঝতে পারল না। ঠাকুরের মা এবার দড়ি দিয়ে একটা গাছের সাথে দড়ি দিয়ে ঠাকুরকে বেঁধে রাখলেন। বললেন এবার আমি দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছি। আপনি এবার শান্তিমত পূজোটা দিয়ে নিন। দাদু এবার আশ্বস্থ হয়ে ঠাকুরকে বকতে বকতে আবার মন্দিরে ঢুকলেন। এবার তিনি মন্দিরের দরজা জানালা বন্ধ করে রাখলেন। আবার অনেক কষ্ট করে পূজার জোগাড় করে ভোগ নিবেদন করে ধ্যানে বসলেন কিছুক্ষণ পর তিনি আবার টুং করে শব্দ শুনলেন। দেখেন ঠাকুর আবার রাধাগোবিন্দের মূর্তি ফেলে নিজে আসনে বসে আছেন।তিনি তাড়াতাড়ি দরজা জানালার দিকে দেখছেন এই ছেলে আসল কি করে। দেখলো না সবি বন্ধ। তখন দাদুর বুঝতে বাকি রইল না এই ছেলে কে স্বয়ং রাধামাধব। তারপর ঠাকুরকে আর কোন বকাঝকা করলেন না লুটিয়ে প্রণাম করলেন। এবার দাদুর মুখে আর কোন কথা নেই। দাদু এবার বুঝতে পারলেন ঠাকুর একটু আগে কি বুঝাতে চেয়েছেন-তিনি আমাকে ডাকেন কেন? আমরাও বুঝতে পারি তিনি কে? স্বয়ং পরমেশ্বর আমাদের মাঝে এসেছেন লীলা করতে । কভু কভু লীলা করে সেই গৌর রায়,কিছু কিছু ভাগ্যবান তারে দেখিবারে পায়।


শ্রীশ্রী ঠাকুর, তৎকালে অনেক ভক্ত সমেত বহু বাদ্যযন্ত্রসহ কীর্তন করতেন। সেই কীর্ত্তনের দৃশ্য ভোলার মত নয়। ঠাকুর তান্ডব নৃত্যে কীর্ত্তন করতেন। ঐসময় ঠাকুরের ভাবসমাধি হত। ঠাকুর ভাবাবস্থায় বিভিন্ন কথা বলতেন। সেইরকম ৭২ দিনের ভাববাণী লিপিবদ্ধ করে পুণ্যপুঁথি হিসেবে পরে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হলো।
শ্রীশ্রী ঠাকুরের জীবনী নিচের লিংকে দেখতে পারেন:
https://www.youtube.com/watch?v=Uh6gVmNKong

শ্রীশ্রী ঠাকুর বলেছেন,যিনি সর্বাবস্থায় মানুষের মঙ্গল কামনা করেন,কখনও কারও প্রতি অন্যায় করেন না, কোন অবস্থাতেই কারও অমঙ্গল কামনা করেন না- তিনি মানুষের ভগবান। যেমন ভগবান যীশুকে দেখেন ক্রশবৃদ্ধ হয়েও শাসকদের জন্য ঈশ্বরের নিকট মঙ্গল প্রার্থনা করেছিলেন।



অনেকে বলেন, ঠাকুর তো একজন সামান্য ছড়াকার, তিনি কি করে ভগবান হবেন?
ঠাকুর তাঁর বেশিরভাগ বাণী সহজ ভাষায় ,সবার বোধগম্য করে দিয়েছেন। ঠাকুরের প্রায় ২৪০০০ বাণী রয়েছে। ছোট ছোট ছড়ার বানীগুলো একজন অশিক্ষিত লোকও বুঝতে পারবে। ঠাকুর বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় বাণী দিয়েছেন। ঠাকুর বাস্তব জীবনের বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনা এবং সমাধানের উপর ভিত্তি করে বানীগুলো দিয়েছেন। ঠাকুরের বানীগুলো সহজবোধ্য এবং পরিশীলিত ভাষায় রচিত। বানীগুলো সহজ-সরল অথচ তাৎপর্যময়। এগুলো সহজে মানুষ বুঝতে পারে ও অনুসরন করতে পারে।অনেকে ঠাকুরের বানী সাহিত্যের উপর পিএইচডি করেছেন। ঠাকুরের নতুন সৃষ্ট বাংলা শব্দের সংখ্যা প্রায় ৫০০০। ঠাকুরের নতুন সৃষ্ট শব্দের উপর একটি অভিধান রয়েছে। দেখুন যারা বেদ পড়েছেন ,কোরাণ পড়েছেন,ত্রিপিটক পড়েছেন ,গীতা পড়েছেন তারা জানেন এগুলোর ভাষা আলাদা। আবার গীতা দেখেন তাও এক ধরনের ছড়ার মত। কোরান,ত্রিপিটকও একই ধরনের। বেদ,মনুসংহিতাও ছোট ছোট ছড়ার মত বানীর সমষ্টি মাত্র। তখনকার ছড়াকাররা মানে ঋষিরা,নবী,ধর্মপ্রচারকরা সংস্কৃত ,পালী ও আরবী ভাষায় বাণী দিয়েছিলেন। ঠাকুর বাংলা ভাষাভাষী ছিলেন তাই তিনি বাংলায় বানী দিয়েছেন। ঠাকুর কোন বানীর মূল্য বেদের কোন বানীর চেয়ে কোন অংশে কম নয়। তাই ঠাকুরের ছড়াগুলোর গুরুত্ব অনেক। এগুলো মানুষের মধ্যে চেতনা জাগাতে, মূল্যবোধ জাগাতে,বিশ্বাস জাগাতে,ভক্তি জাগাতে,দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ জাগাতে অনেক সহযোগিতা করে। তাই ঠাকুরের ছড়ার বানীকে হেয় করে দেখার কোন সুযোগ নেই। সাহিত্যিকদের ছড়া আর ঠাকুরের ছড়ার অর্থগত,প্রয়োগগত, আধ্যাত্মিকগত এবং প্রেক্ষাপটগত অনেক পার্থক্য রয়েছে। সাহিত্যিকের ছড়ার মাঝে প্রেম,ভাবুকতা, কষ্ট, আকাঙ্খা, বিরহ,বেদনা ইত্যাদি থাকে। ঠাকুরের ছড়া কিন্তু সম্পূর্ন ভিন্ন প্রাসঙ্গিকতা ও সমস্যা সমাধানের বিভিন্ন সমাধানী সূত্র রয়েছে। । ঠাকুর শুধু ছড়া দেন নি। ঠাকুরের সাথে বিভিন্ন সময়ে আসা বিভিন্ন লোকের বহু প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন সমাধান দিয়েছেন । আর এসব লিপিবদ্ধ আছে ঠাকুরের আলোচনা প্রসঙ্গে, দীপরক্ষী, কথা প্রসঙ্গে, দীপরক্ষী গ্রন্থে। ঠাকুরের মোট গ্রন্থের সংখ্যা ১৫২টি। ঠাকুর জীবিত থাকাকালীন অনেক সাহিত্যিক ঠাকুরের কাছে এসেছেন যেমন-শরৎচন্দ্র ,বিভূতিভূষণ,হেমচন্দ্র প্রমুখ।। তারা ঠাকুরের বাণীগুলো পরে সবাই চমৎকৃত হয়েছেন।ঠাকুরের সাথে আলোচনা করে বুঝতে পেরেছিলেন সত্যিকার সাহিত্য কি। অনেকে ঠাকুরকে ইষ্টদেবতারূপে গ্রহন করেছেন। ঠাকুরের নির্দেশ অনুযায়ী সাহিত্য সৃষ্টিতে ব্রতী হয়েছেন।
হিন্দু নির্যাতনের কারন ও প্রতিকার সম্পর্কে জানুন.....






































শ্রীশ্রী ঠাকুর অনেক বিষয়ের উপর বাণী দিয়েছেন। ধর্ম,সংসার,দেশ,সমাজ,চরিত্র,বিজ্ঞান,দর্শন,রাজনীতি, অর্থনীতি, কৃষি, শিল্প, ব্যবসা, নারী জাতি, জ্ঞান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অভ্যাস, সংস্কার, আধ্যাত্মিকতা, মানবজীবন, বৈশ্বিক সম্পর্ক, ন্যায়, আইন, বিভিন্ন সম্প্রদায় ইত্যাদি। মূলত, তিনি মানুষের সামগ্রিক জীবন বিধান নিয়ে বহু আলোচনা করেছেন। তাঁর সমাধানী সূত্রগুলো অদ্ভুদ এবং বাস্তব। বাঁচা এবং বাড়াকে তিনি তার সব বাণীর মূল সূত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন। তিনি সবকিছুর মধ্যে আমরা যাতে ভালো থাকি সুস্থ থাকি তাই চাইতেন।
শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের গ্রন্থসমূহের তালিকা :
১) সত্যানুসরণ
২) পুণ্যপুঁথি
৩) নারীর নীতি
৪) পথের কড়ি
৫) চলার সাথী
৬) সদবিধায়না
৭) আর্য-প্রতিমোক্ষ ১-২৪ খন্ড
৮) অনুশ্রুতি ১-৭ম খন্ড
৯) শাশ্বতী
১০) সম্বিতী
১১) আচার-চর্য্যা
১২) চর্য্যা-সূক্ত
১৩) শিক্ষা-বিধায়না
১৪) নিষ্ঠা-বিধায়না
১৫) আদর্শ-বিনায়ক
১৬) সংজ্ঞা-সমীক্ষা
১৭) দর্শন-বিধায়না
১৮) বিকৃতি-বিধায়না
১৯) ধৃতি-বিধায়না
২০) প্রীতি-বিনায়ক
২১) স্বাস্থ্য ও সদাচার সূত্র
২২) যতি-অভিধর্ম
২৩) দেবী-সূক্ত
২৪) জীবন-দীপ্তি
২৫) বিধান-বিনায়ক
২৬) বিবাহ-বিধায়না
২৭) যাজী-সূক্ত
২৮) সেবা-বিধায়না
২৯) সমাজ-সন্দীপনা
৩০) আর্য্যকৃষ্টি
৩১) তপো-বিধায়না
৩২)নীতি -বিধায়না
৩৩) কৃতি-বিধায়না
৩৪) বিবিধ-সূক্ত
৩৫) বিধি-বিন্যাস
৩৬) আশীস-বাণী
৩৭) অমিয় লিপি
৩৮) নানাপ্রসঙ্গে ১-৪ খন্ড
৩৯) আলোচনা প্রসঙ্গে ১-২২ খন্ড
৪০) কথা প্রসঙ্গে ১-৩ খন্ড
৪১) নারীর পথে
৪২) দীপরক্ষী ১-৬ খন্ড
৪৩) অমিয় বাণী
৪৪) ইসলাম প্রসঙ্গে
৪৫) প্রার্থনা
৪৬) The Message 1-9 Vol.
৪৭) Magna Dicta
অন্যান্য লেখকের বইসমূহ
১) যেমন তাঁকে দেখি
২) শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র
৩) ইষ্ট-প্রসঙ্গে ১-৬ খন্ড
৪) বাণী-সাহিত্য
৫) অখন্ড জীবন দর্শন
৬) দয়াল ঠাকুর
৭) আমেরিকার পথে
৮) শ্রীশ্রী ঠাকুর ও দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন
৯) আমার জীবনে শ্রীশ্রী ঠাকুর
১০) বাগর্থদীপিকা( ঠাকুরের নবসৃষ্ট প্রায় ৫০০০ শব্দকোষ)


























শ্রীশ্রী ঠাকুরের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন নেতাজী সুভাষ বসু, মহাত্মা গান্ধী, দেশপ্রিয় চিত্তরঞ্জন দাশ আরও কত বরেণ্য নেতা, শিক্ষাবিধ,রাজনীতিবিদ,অর্থনীতিবিদ, বিজ্ঞানী, সমাজসংস্কারক, চিকিৎসক,ধর্মীয় গুরু, সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ। নেতাজী সুভাষ বসুর গুরু ছিলেন শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র। সেই সুবাদে তিনি ঠাকুরের কাছে শিষ্যত্ব বরণ করেন আইসিএস পরীক্ষা পাসের পর। ভারতের স্বাধীনতা, স্বরাজ আন্দোলন,ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, দেশের সংস্কার, অর্থনীতি, রাজনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন শ্রীশ্রী ঠাকুরের সাথে। শ্রীশ্রী ঠাকুর সুভাষ বসুর বাড়িতে তার মা-বাবার আমন্ত্রণে কয়েক মাস ছিলেন। নেতাজী ঠাকুরের আদর্শ বুকে ধারণ করে দেশের স্বাধীনতার জন্য , দেশের উন্নতির জন্য আমরণ কাজ করে গেছেন। তার সেই পরাক্রম না থাকলে হয়তো ভারত আজও পরাধীন থাকতো।
শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও নেতাজীর বিষয়ে আলোচনা:
https://www.youtube.com/watch?v=1SdRwElfPqs








ঠাকুর ভগবান হলে হুক্কা কেন খাবেন? উনি তো হুক্কার ঠাকুর। এমন প্রশ্ন অনেকেই করেন।
ঠাকুর বেঁচেছিলেন ১৮৮৮-১৯৬৯ সাল পর্যন্ত। ঐসময় সমাজে হুক্কা খাওয়ার রেওয়াজ ছিলো। রাজা বাদশারাও হুক্কা খেতেন।বাস্তবিকপক্ষে, ভগবান যতটুকু সহ্য করতে পারেন আমরা তা তো পারবো না। ঠাকুর ছোটবেলায় বিষের বড়ি খেয়ে সহ্য করেছিলেন। সবাই ভেবেছিলো ঠাকুর তখনই মারা যাবে। কিন্তু ঠাকুরের কিছুই হয় নি। তিনি যা পারেন আমরা কিন্তু তা পারবো না। শিব যেমন বিষ পান করেছিলেন,সেরকম খানিকটা। তবে বর্তমানে ঠাকুরের বংশধরেরা কেউ হুক্কা খায় না। আবার দেখেন এক এক ভগবানের এক এক নিদর্শন থাকে যেমন শ্রীকৃষ্ণের হাতে বাঁশী,রামের হাতে তীর ধনুক আর শ্রীশ্রী ঠাকুরের হাতে হুক্কা।
শ্রীশ্রী ঠাকুরের দাড়ি ছিল এবং ঠাকুরের তো বয়স হয়েছে এবং মারা গিয়েছেন তাহলে তিনি কি করে ভগবান হবেন?
জয় জয় অনুকূল ঠাকুর
দেখুন ,পৃথিবীতে এমন একজন দেখাতে পারবেন না যিনি অমর। এটাই প্রকৃতির বিধান। বিধানকে পরিপালন করে শেখানোর জন্য তিনি আসেন। তাহলে রাম কেন এত কষ্ট ভোগ করলেন? শ্রীকৃষ্ণ কেন এত কষ্ট করলেন? ভগবানও প্রকৃতির বিধানের বাইরে কিছু করেন না। পৃথিবীতে চিরদিন কেউ থাকতে পারবে না। তাহলে তো ভগবান রাম,ভগবান শ্রীকৃষ্ণ,ভগবান শ্রীচৈতন্য অমর হয়ে থাকতে পারতেন। তাঁরাও তো পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। শ্রীরাম,শ্রীকৃষ্ণ,শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সবাই পৃথিবীতে বিধির বিধান প্রতিষ্ঠা করতে এসেছেন ভাঙ্গতে নয়। সবাইকে বিদায় নিতেই হবে। রামও সরজু নদীতে প্রাণ বিসর্জন দিলেন।
ঠাকুর একজন মানুষ ছিলেন। তার গোঁফ ও দাঁড়ি ছিল। তাহলে তিনি ভগবান কেমনে হবেন?
ভগবানের বৈশিষ্ট্যে কোথাও লেখা নেই যে ভগবানের দাড়ি গোঁফ থাকতে পারবে না। যারা এই সব অজুহাত তোলে তারা যে কত বড় মাপের আহাম্মক তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা যদি জি বাংলা আর স্টার জলসার শ্রীকৃষ্ণকে দেখে বলি আর বিশ্বাস করি যে তার দাড়ি গোঁফ ছিলো না এটা ভিত্তিহীন কথা। আর দাড়ি গোঁফ থাকলে যে ভগবান হবে না সেটাও ভিত্তিহীন কথা। এসব অযৌক্তিক বর্ণনা উপস্থাপন করে মানুষকে বিভ্রান্ত করা ছাড়া আর কোন কাজ হবে না।



পৃথিবীতে একমাত্র ভগবান হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ আর কেউ ভগবান হতে পারেন না?
যারা এই বিশ্বাস পোষণ করেন এবং বুকে লালন করেন কিংবা প্রচার করেন তাদেরকে বলতে চাই শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলে গেছেন -
যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানিঃ ভবতি ভারত ।
অভ্যুত্থানম অধর্মস্য তদা আত্মনম্‌ সৃজামি অহম্‌ ।।৭
অর্থ-হে ভরত ,যখনই ধর্মের অধঃপতন হয় এবং অধর্মের অভূত্থান হয় তখনই আমি নিজেকে প্রকাশ করে অবতীর্ন হই।
পরিত্রানায় সাধুনাম বিনাশায়ঃ চ দুস্কৃতম্‌ ।
ধর্ম সংস্থাপনার্থায় সম্ভাবামি যুগে যুগে ।।৮
অর্থ-সাধুদের পরিত্রান করার জন্য এবং দুষ্কৃতিকারীদের বিনাশ করার জন্য এবং ধর্ম সংস্থাপনের জন্য আমি যুগে যুগে অবতীর্ন হই।
শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং বলছেন ,আমি যুগে যুগে আসি। তাহলে আমরা কেন তাঁর কথাকে অগ্রাহ্য করে নিজেদের মত করে নিজেদের স্বার্থে ব্যাখ্যা বানাবো। তিনি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুরূপে এসেছেন,শ্রীরামকৃষ্ণরূপে এসেছেন,সর্বশেষ শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্ররূপে এসেছেন। তাঁর বানী দিয়ে তিনি তাঁর পরিচয় দিয়েছেন। আমরা যদি তাঁকে না চিনি বা চিনেও তাঁকে গ্রহন না করি তবে আমাদের মত দুর্ভাগা আর কে। ঠাকুর বলেছেন, এবার যা দিয়ে গেলাম দশ হাজার বছর কোন অবতারকে আর আসতে হবে না।




প্রশ্ন রয়েছে,কলিযুগে ভগবান কেন এতবার আসলেন? কলিযুগের অবতার একজনই আর তিনি হলেন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু।



কল্কি যুগ হচ্ছে পাপের যুগ। বেশিরভাগ লোকই পাপ কাজে লিপ্ত। শিক্ষিত বা অশিক্ষিত সবাই অসৎ কাজে জর্জরিত। পাপ কর্মে সংসার ভারসাম্যহীন। তার জন্য মানবের মুক্তির জন্য নামের প্রয়োজন ছিলো,ভগবানের আসার প্রয়োজন ছিল। তাই কল্কিতে তিনি বার বার এসেছেন। আর প্রভু শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র নিয়ে এলেন সেই দয়ালধামের পূর্ণ শক্তির মহানাম। । আবার মজার ব্যাপার দেখুন,যারা বিশ্বাস করেন, চৈতন্য মহাপ্রভুই একমাত্র কল্কি অবতার সেই চৈতন্যমহাপ্রভু বলেছেন, এই নাম নয়রে মাধাই আরও নাম আছে,এই নাম নিয়ে যাবে ঐ নামের কাছে।
তিনি আরও বলেছেন,এইরূপে হব আমি দুই অবতার,আনন্দে কীর্তনে মজাব সংসার। তিনি পরবর্তীতে শ্রীরামকৃষ্ণরূপে আর সর্বশেষ ভগবান শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্ররূপে ধরাধামে অবতীর্ন হয়েছেন। শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব বলেছিলেন যে, এবার আমি শিষ্যদের পূর্ণজ্ঞান দিয়ে যাচ্ছি না। আমি শীঘ্রই আবার আসবো। ঈশাণ কোনে আমার দেহ হবে। সেই পাবনার সম্বলপুরে এলেন নবঘনশ্যাম শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকুলচন্দ্র। যুগপুরুষোত্তম, পরমপ্রেমময়, আপূরীয়মান, বৈশিষ্ট্যপালী, নররূপী নারায়ন,পরব্রহ্ম শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রকে ইষ্টদেবতারূপে গ্রহণ করা এবং তাঁর আদর্শ অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরি। সুতরাং তাঁকে গ্রহন করা সবার কর্তব্য।




শ্রীশ্রী ঠাকুরের সংসার আছে। তিনি কি করে ভগবান হবেন?

দেখুন, ঠাকুর সুন্দর একটা বানী দিয়েছেন-
পুরুষোত্তম জন্মসিদ্ধ,মন্ত্রপ্রতীক তিনি,
সাধক পুরুষ তাকেই বলে,সাধনসিদ্ধ যিনি।
যারা ভগবানকে পাওয়ার জন্য সাধনা করেন বনজঙ্গলে বা আশ্রমে যান তারা সংসার করেন না। তারা ব্যক্তিগত মুক্তির জন্য সাধনা করেন। কিন্তু যিনি স্বয়ং অবতারী তার সাধনার প্রয়োজন হয় না তবে লোকশিক্ষার জন্য তিনি করেন,দীক্ষা নেন,আচার অনুষ্ঠান পালন করেন। তাই প্রকৃতপক্ষে সব ভগবানেরই সংসার আছে,সন্তান-সন্ততি আছে। লোকশিক্ষার জন্য তাঁরা সংসারের সব দায়িত্ব পালন করেন,দু:খ-যন্ত্রনা ভোগ করেন,হাসেন,কাঁদেন।







শ্রীশ্রী ঠাকুর এবার পূর্ণ সংসারীরূপে এসেছেন। ঠাকুর এবার বংশ পরম্পরা রেখে গেছেন। আগে যতবার এসেছিলেন ততবার বংশ ধংস করে গিয়েছিলেন। যেমন শ্রীরাম কোন বংশ রেখে যান নি, শ্রীকৃষ্ণ সমগ্র যদুবংশ ধ্বংস করে ব্যাধের হাতে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন। এবার ঠাকুর বৌ-বাচ্চা, নাতি-নাতনী এবং ভক্তবৃন্দসহ সব নিয়ে এলেন। এবারের লীলা তাঁর অতি চমৎকার।




আবার প্রশ্ন করা হয়-ঠাকুর তো গুরু ,ভগবান নন?

ঠাকুর কে? তাঁকে বুঝার ক্ষমতা কারো আছে কিনা আমার জানা নেই। কারন ঠাকুরের জীবনী পড়লে তা কিছুটা বোধগম্য হবে। শ্রীকৃষ্ণকে অর্জুন যেমন বিশ্বাস করতে পারেন নি,তেমনি ঠাকুরও যে ভগবান অনেকে তা বিশ্বাস করেন নি। ঠাকুর যখন বিশ্বরূপ দেখালেন তখন সেই ভক্ত বিশ্বাস করলেন। তাদের মধ্যে ভক্তি জাগলো। তারা ঠাকুরের জন্য আকুল হলেন। আবার ভগবানের কাছে মুক্তির জন্য ছুটে গেলেন। ভাবসমাধি যখন হত তখন শ্রীশ্রীঠাকুর যে কথাগুলো বলতেন তার মধ্যে ঠাকুর কে তার পরিচয় পাওয়া যায়। আবার, ঠাকুরের বিভিন্ন লীলার মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি কে? আবার , ঠাকুরের বিভিন্ন সময়ের আলোচনায় উঠে এসেছে তিনি কে? জীবের প্রতি অপরীসীম দয়া যিনি পরমপিতা তারই থাকে। কারন তিনি জগদীশ্বর। ঠাকুর হচ্ছেন অবতারী অর্থাৎ যিনি অবতারগনকে প্রেরন করেন। তিনি স্বয়ং এবার অবতীর্ণ হলেন। তার দিব্যলীলা যারা দেখেছেন তাদের বর্ণনা পড়লে বুঝতে পারা যায়। প্রেমভক্তি রসে তিনি কি মধুর লীলা করেছেন। তাঁর এই নরতনুতে কি দিব্যজ্যোতি ছিলো,কি আকর্ষন ছিল তাঁর ব্যবহারে ,ভাষায়, আচরনে। প্রতিটা মুহূর্ত দেন রহস্যময়। সে এক অদ্ভুদ লীলা। তিনি ভগবান তাই তো তিনি সবি,প্রতিটি বালুকনা তিনি,বিশ্বব্রহ্মান্ডের যা কিছু সব তিনি। তার নির্দেশ ছাড়া গাছের একটা পাতাও নড়ে না। তাই ঠাকুর বলেছেন,তোরা যে যা ভাবিস আমি তাই।
কূয়োর ব্যাঙের দ্বারা কি কখনো বুঝা সম্ভব সমুদ্র কত বড়। তেমনি ঠাকুরকে বুঝা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। অনুভব দিয়ে কিছুটা জানা যায় মাত্র।



সেই শ্রীকৃষ্ণের বানী-
যে যথা মাং প্রপদন্তে.....।
ঠাকুর বলেছেন, প্রেরিতগন এক ও অভিন্ন। তাঁরা একই বার্তা বহন করে নিয়ে আসেন। তাঁদের বার্তা থাকে যুগমাফিক অর্থাৎ যুগের প্রয়োজনানুযায়ী। বর্তমান যুগসমস্যাগুলোর সমাধান তাঁদের বানীতে পাওয়া যায়।
ঠাকুর এবার পঞ্চনীতি দিয়েছেন-যজন,যাজন,ইস্টভৃতি,স্বস্ত্যয়নী ও সদাচার।
হিন্দুদের মূল ধর্মগ্রন্থ বেদ। তাহলে বেদই অনুসরনীয়। সদগুরু ও যুগপুরুষোত্তমকে কেন মানবো?

বেদ রচিত হয়েছে অনেক অনেক আগে প্রায় ২৫০০ বছর আগে। ভগবান ঋষিরা এসব বেদ রচনা করেন। এসব ছিল তখনকার মূল জ্ঞান যা এখনও অনুসরনীয়। কিন্তু পরবর্তীতে ভগবান যুগে যুগে এসে যুগের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ধর্মের বিভিন্ন বিধান দিয়ে গেছেন। এসব নির্দেশনা যুগধর্ম হিসেবে গৃহীত হয়। এসব পথনির্দেশক ও অবতার যুগধর্মের দ্বারা মানবধর্মকে এগিয়ে নিয়ে যান। তাঁরা ধর্মস্থাপনার মধ্যে দিয়ে পৃথিবীতে শান্তি ফিরিয়ে আনেন। তাদের নির্দেশিত পথ বেদের সাথে অসামঞ্জস্য নয়। তা বরং বেদকে অলংকৃত করে। বেদের বাণীকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে। সনাতনের যে আর্যধারা তা সমুন্নত করে। যুগপুরুষোত্তমের দেওয়া আদর্শ অনুসরণই বিধিসম্মত এবং সবার জন্য মঙ্গলদায়ক। সদগুরুর আদর্শ অনুসরনের মধ্যে দিয়ে মানুষের জীবন সুন্দর হয় এবং সুসংগঠিত হয়। যুগপুরুষোত্তম হচ্ছেন সচ্চিদানন্দবিগ্রহ। তিনি সবাইকে পরিপূরণ করতেই আসেন। সুতরাং বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা যায় এসব যুগধর্ম অনুসরন করে বিশাল বিশাল সম্প্রদায়ের সৃষ্টি হয়। আলোকিত হয় অন্ধকার জগৎ। বুদ্ধ সম্প্রদায়, খ্রীস্টান সম্প্রদায়,মুসলমান সম্প্রদায়, শিখ সম্প্রদায় অন্যতম। পাশ্চাত্য দেশ আজ বেদকে মূল্যায়ন করে এগিয়ে গেল। আমরা তা বুঝতে চাইনি। তেমনি আজও ঠাকুরকে আমরা অবজ্ঞা করছি। ঠাকুরের জীবনী নিয়ে ,ঠাকুরের বাণী নিয়ে কুটুক্তি করছি। অথচ আমাদের যে সমস্যাগুলো আছে তার অনেক সমাধান ঠাকুর বলে দিয়ে গেছেন। ঠাকুরের পঞ্চনীতিতে আছে সদাচার। সদাচার যে কত প্রয়োজনীয় জিনিস, তার অনুসরন করলে যে কত উপকার পাওয়া যায় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আজকে পথের ফকির থেকে শুরু করে প্রেসিডেন্ট সবাই খুব ভালোভাবে এবং সুস্থভাবে বাঁচার জন্য সদাচার মানছে। কারন এছাড়া বাঁচার আর কোন পথ নাই। আপনি সৎসঙ্গী হন বা না হন আপনাকে সদাচার মানতেই হবে। পরিবেশগত কারনে আপনাকে বাধ্য হয়ে মানতে হচ্ছে। না মানলে বরং আপনার জন্য বিপদ।









অনেকে বলেন, ঠাকুর তো এবার যুদ্ধ করেন নি। তাহলে তিনি কি করে ভগবান হবেন?
ঠাকুরকেও ভক্তরা একই প্রশ্ন করেছিলেন। ঠাকুর বলেছিলেন,আমি এবার অস্র দিয়ে কাউকে নিধন করবো না। কারন এবার ঘরে ঘরে পাপী। আগে তো দু-একজন অসুর ছিল। এবার তো ঘরে ঘরে অসুর। মারলে সবাইকে মারতে হবে। তাই নামের মাধ্যমে সবাইকে উদ্ধার করতে হবে।জ্ঞানের তরবারি দিয়ে পাপ নাশ করে সবাইকে ভক্তির পথে,আলোর পথে,সাধনার পথে,সৎ পথে , পাপের পথ হতে পূণ্যের পথে নিয়ে আসতে হবে। তিনি সারা জীবন শয়তানী শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। মানুষের মঙ্গলের জন্য অবিরাম সংগ্রাম করেছেন। সবসময় সবার মঙ্গলের জন্য সদাতৎপর থাকতেন। অন্যায়কে তিনি কখনো প্রশ্রয় দেন নি আবার সবাইকে ভালোবেসেছেন। তিনি একটি কথাই বলতেন, ভালোবাসা দিয়ে মানুষ যদি কুকুর বিড়ালকে বশে আনতে পারে ,মানুষকে কেন পারা যাবে না। সবাই ভালোবাসার কাঙ্গাল। ভালোবাসা সবাই চাই সে চোর হোক আর সাধু হোক। এর উপর কোন তত্ত্ব থাকতে পারে না। প্রেম দিয়ে তিনি পৃথিবী জয় করার কথা বলেছেন। ভালোর বিপ্লব ঘটাতে বলেছেন। তাই ছিল তাঁর নিরন্তর সাধনা। এটাই আজকে সৎসঙ্গীদের মূল প্রেরণা। সবাইকে ভালোবাসা বিলানো। সবার মধ্যে কি ভালো গুন আছে তার বিকাশ করাই ছিল তার লক্ষ্য। যার যার বৈশিষ্ট্যমাফিক তাকে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই তার সাত্বত চিন্তা।
ঠাকুরের জীবনী পড়ুন। ঠাকুর সম্পর্কে না জেনে কোন বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াবেন না। সবাইকে শেয়ার করুন।




ঠাকুর ছিলেন স্বয়ং পরমেশ্বর ও ভগবান। তিনি ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। তিনি জীবের উদ্ধারের জন্য প্রতি যুগে যুগে আসেন। মানুষকে তার বাঁচার পথ দেখিয়ে যান। তাঁর সন্তান যেন পথভ্রষ্ট না হয় তাই পথ দেখানোর জন্য তিনি পৃথিবীতে আসেন।
শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র কি কল্কি অবতারী?
হ্যাঁ, ঠাকুর কল্কি অবতারী যিনি অবতারদের প্রেরণ করেন। যিনি অবতারদের প্রেরণ করেন এবার তিনি স্বয়ং এসেছেন।
বর্তমান সৎসঙ্গ:
বর্তমান সৎসঙ্গের পরিচালক এবং পূজ্যপাদ আচার্য্যদেব হলেন শ্রীশ্রী দাদা। তাঁর ঐশী নির্দেশনায় সৎসঙ্গ দ্রুতবেগে এগিয়ে যাচ্ছে। তাঁর বড় সন্তান পূজনীয় বাবাইদা এবং বাবাইদার বড় সন্তান পূজনীয় অবিনদা ঠাকুরের আদর্শকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অবিরত কাজ করে যাচ্ছেন। দেওঘরে আগত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সুনিপুন দক্ষতায়। সৎসঙ্গীরাও আচার্য্যদেবের আদেশ বাস্তবায়নে সদা তৎপর। কোন নির্দেশনা পেলেই সেটি বাস্তবায়নে সৎসঙ্গীরা প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সৎসঙ্গের আদর্শ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। সবাই আসুন ঠাকুরের সদদীক্ষা নিয়ে তাঁর আদর্শ অনুসরণ করে চলি।
বিশ্বের বহু দেশে সৎসঙ্গের কার্যক্রম চলছে। বহু মন্দির রয়েছে বহু জায়গায়। প্রায় ১০ কোটির মত দীক্ষিত সৎসঙ্গী আছেন। সৎসঙ্গ একটি আন্দোলন, সৎ-এর আন্দোলন। সৎসঙ্গ এগিয়ে যাচ্ছে,যাবে।
জয়গুরু।বন্দেপুরুষোত্তমম।
চলনহারা চরণ পূজা ,বন্ধ্যা পূজা তাই জানিস।





































































































No comments:

Post a Comment