Amazon Online Store

Blog Archive

Total Pageviews

Tuesday, June 9, 2020

শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও জগন্নাথদেব

শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও জগন্নাথদেব

যিনি এই দুনিয়ার মালিক ও জগতের স্বামী তিনিই জগন্নাথ। আমরা সবাই জগন্নাথদেবকে চিনি। পুরীর সেই জগন্নাথদেবের কথা আমরা জানি। পুরীর জগন্নাথদেবের মন্দিরের বিশাল রথযাত্রা খুবই জনপ্রিয়। জগন্নাথদেবের মন্দিরে জগন্নাথের সাথে রয়েছে বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি।
জগন্নাথের মূর্তির কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। জগন্নাথ মূর্তির হাত-পা নেই। শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র জগন্নাথের এই মূর্তির বৈশিষ্ট্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন সুন্দর করে।
জগন্নাথের হাত-পা নেই মানে তিনি কাউকে ধরেন না। আমাদের তাঁকে ধরতে হয়। তাহলে তিনি আমাদের ধরে রাখেন। তিনি আমাদের রক্ষা করেন। তিনি নিজে থেকে আমাদের ধরে রাখেন না। আমরা ধরলে তিনি ধরেন। যেমন ধরুন আপনি যদি ভগবানের কৃপা পেতে চান তাহলে তাঁর নিকট হাত পাততে হবে। হাত না পাতলে তো ভগবানেরও কৃপা পাওয়া যায় না। ঐ হাত পা ছাড়া জগন্নাথকে ধরে থাকলে তিনি দয়া করেন। জীবনকে টেনে নিয়ে যান।

Monday, June 8, 2020

সনাতন হিন্দু ধর্মের মূল গ্রন্থসমূহ

সনাতন হিন্দু ধর্মের মূল গ্রন্থসমূহঃ-
 
 বেদ ৪ টি- মন্ত্র সংখ্যা- ২০,৪৩৪ 
১.ঋগবেদ. মন্ত্রসংখ্যা- ১০,৫৮৯
 ২.সামবেদ. মন্ত্রসংখ্যা- ১,৮৯৩ 
৩.যজু:বেদ. মন্ত্র সংখ্যা- ১,৯৭৫
 ৪.অথর্ববেদ. মন্ত্রসংখ্যা- ৫,৯৭৭ 


 উপবেদ ৪ টি. 
১. আয়ুর্বেদ. ২.ধনুর্বেদ. ৩.গন্ধর্ববেদ. ৪.অর্থশাস্ত্র. 
 বেদাঙ্গ -৬ টি. 
১.শিক্ষা- পাণিনী ২.কল্প- বিভিন্ন ঋষি সম্প্রদায় ৩.ব্যাকরণ- পাণিনী. ৪.নিরুক্ত- যাস্ক. 
৫.ছন্দ- পিঙ্গলাচার্য. ৬.জ্যোতিষ- গর্ণ. 
 বেদের উপাঙ্গ-৪ টি.
 ১.পুরাণ. ২.মীমাংসা. ৩.ন্যায়. ৪.ধর্মশাস্ত্র 
বেদের জ্ঞানকাণ্ড- ২ টি
১.আরণ্যক. ২.উপনিষদ. 
 আরণ্যক - ৪ টি
১.ঐতেরেয়. ২.কৌষীতকী ৩.শতপথ ব্রহ্মণ. ৪.ছান্দোগ্য.
 উপনিষদ -১২ টি. 
১.বৃহদারণ্যক মন্ত্র- ৪৩৫. 
২.ছান্দোগ মন্ত্র- ৬৬৮
 ৩.তৈত্তিরীয় মন্ত্র- ৬৮. 
৪.ঐতরেয় মন্দ্র- ৩৩ 
৫.ঈশোপনিষ মন্ত্র- ১৮ 
৬.কেন উপনিষদ- ৩৫ 
৭.কঠো উপনিষদ- ১১৯. 
৮.প্রশ্ন উপনিষদ- ৬৭ 
৯.মুণ্ডকোপনিষদ- ৬৫. 
১০.মাণ্ডুক্যউপনিষদ- ১২
 ১১.শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ. মন্ত্র. - ১১৩.
 ১২.কৌষীতকী উপনিষদ মন্ত্র. - ৪৯.
 ষড় দর্শন -৬ টি.
 ১.সাংখ্যা দর্শন - মহর্ষি কপিল. 
২.যোগ দর্শন- পাতঞ্জলি. 
৩.ন্যায় দর্শন - গৌতম. 
৪.বৈশেষিক দর্শন-কণাদ. 
৫.পূর্ব মীমাংসা - জৈমিনী. 
৬.উত্তর মীমাংসা বেদান্ত দর্শন- ব্যাসদেব. 
মীমাংসা - ২ টি. ১.কর্ম মীমাংসা ২.ব্রহ্ম মীমাংস বা ব্রহ্মসূত্র. 
 স্মৃতি সংহিতা(সমাজ ব্যবস্থাপক শাস্ত্র) ২০টি 
১.মনু সংহিতা 
২.অত্রি সংহিতা. 
৩.বিষ্ণু সংহিতা.
 ৪.হরিত সংহিতা. 
৫.যাজ্ঞবল্ক্য সংহিতা. 
৬.পরাশর সংহিতা. 
৭.ব্যাস সংহিতা. 
৮.উশনা সংহিতা. 
৯.অঙ্গিরা সংহিতা. 
১০.যম সংহিতা. 
১১.অপস্তম্ভ সংহিতা 
১২.সম্বর্ত সংহিতা.
 ১৩.কাত্যায়ন সংহিতা. 
১৪.বৃহস্পতি সংহিতা. 
১৫.শঙ্খ সংহিতা 
১৬.লিখিত সংহিতা. 
১৭.দক্ষ সংহিতা. 
১৮.গৌতম সংহিতা. 
১৯.শতাতপ সংহিতা. 
২০.বশিষ্ট সংহিতা. 
 পুরাণ - ২ টি. ১.মহাপুরাণ. ২.উপ-পুরাণ. 
 মহা পুরাণ -১৮টি. 
১.ব্রহ্ম পুরাণ মন্ত্রসংখা-১০,০০০. 
২.শিব পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-২৪,০০০. 
৩.পদ্ম পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-৫৫,০০০. 
৪.বিষ্ণু পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-২৩,০০০. 
৫.ভাগবত মহাপুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৮,০০০. 
৬.মার্কণ্ডেয় পুনাণ মন্ত্রসংখ্যা-৯,০০০. 
৭.অগ্নি পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-৫,৪০০. 
৮.ভবিষত পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৪,৫০০. 
৯.ব্রহ্মবৈবর্ত্ত পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৮ ,০০০. 
১০.মৎস পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৪,০০০. 
১১.লিঙ্গ পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১১,০০০. 
১২.বরাহ পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-২৪,০০০. 
১৩.কুর্ম্ম পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৭,০০০. 
১৪.গরুড় পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৯,০০০. 
১৫.ব্রহ্মান্ড পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১২,০০০. 
১৬.নারদীয় পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-২৫,০০০ 
১৭.স্কন্ধ পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-৮১,১০১. 
১৮.বামন পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১০,০০০. 
রামায়ণ. মহাভারত. দেবী ভাগবত(শাক্ত সম্প্রদায়) 
 শ্রীমদ্ভাগবদ(বৈষ্ণব সম্প্রদায়) 
চৈতন্যচরিতামৃত. 
শ্রীমদ্ভাগবতগীতা মন্ত্রসংখ্যা-৭০০ 
 শ্রীশ্রীচণ্ডী.মন্ত্রসংখ্যা-৭০০ 

সৎসঙ্গীদের অমূল্য গ্রন্থ
 সত্যানুসরণ 
পূণ্যপুথি 
নারীর নীতি 
আলোচনা প্রসঙ্গে 
চলার সাথী 
পথের কড়ি 
কথাপ্রসঙ্গে 
নানা প্রসঙ্গে 
চর্য্যাসূক্ত 
দীপরক্ষী 
সমাজ সন্দীপনা 
ইসলাম প্রসঙ্গে 
নারীর পথে 
সম্বিতি 
 অনুশ্রুতি
সদবিধায়না
বিজ্ঞান বিভূতি

 জয়গুরু,বন্দেপুরুষোত্তমম

Tuesday, May 26, 2020

কাকে অনুসরণ করলে ধর্ম সিদ্ধ হবে না

যাঁ'কে অনুসরণ করলে ধর্মসিদ্ধ হবে না
==============================

যে-কোন ধর্মসংস্থা
বা দ্বিজাধিকরণই হো'ক না কেন --
যা' পূরয়মান অন্যান্য সংস্থায়
বিদ্বেষ পোষণ করে,
কাউকে ছোট করে,
কাউকে বড় করে,
অবতার বা প্রেরিত পুরুষগণের মধ্যে
ভেদ সৃষ্টি করে
বা উচ্চ-নীচ ক'রে ব্যাখ্যা করে,
তাঁ'দের বাণী ও সংস্কৃতিকে
নিজের প্রবৃত্তি-অনুপাতিক
ব্যত্যয়ী পরিবেশন করে,
ঈশ্বরকে দ্বয়ীভাবে আখ্যা দেয়,
যে-ধর্ম বা মতবাদ পঞ্চবর্হিকে স্বীকার করে না,
সপ্তার্চ্চি পালনে বিমুখ,
ঈশ্বর বা পূর্য্যমাণ প্রেরিতদের প্রতি
আত্মসমর্পণ ও আত্মনিবেদনে
নিয়ন্ত্রণ-পরান্মুখ,
ব্যক্তিস্বাতন্ত্রকে রক্ষা ক'রে
সমষ্টিকে সম্বর্দ্ধনা করার বালাই যা'তে নাই,
সত্তা ও ঈশ্বরে সার্থক হ'য়ে ওঠে না --
এমনতর প্রাণহীন বিকৃত
আনুষ্ঠানিক আতিশয্যকেই
যা' মুখ্য ধ'রে নেয়,
জনন-নীতিতে কৌলিন সংস্কৃতি-অনুপাতিক
অনুলোম বা প্রতিলোম
গ্রহণ বা বর্জ্জনের
ধান্ধা যেখানে নাই,
যা' ভূমা-উদ্দীপী নয়,
অব্যয়ী প্রজ্ঞার অন্তরায়ী
বিদ্বেষপ্রসূ বিকৃত জ্ঞানের আমন্ত্রক,
ভেদ, বিপর্য্যয় ও সঙ্কীর্ণ বুদ্ধির স্রষ্টা,
প্রবৃত্তি -অভিভূতির ঔদার্যপূর্ণ যন্ত্র,
-- এমনতর সংস্থা বা দ্বিজাধিকরণ
বা তা'র নায়ককে
অনুসরণ করতে যেও না --
সে-অনুসরণ ধর্মসিদ্ধ হবে না,
বিধিনিঃসৃত সত্তা সম্বর্দ্ধনী নয় তা' ,
তা' শয়তানেরই সন্মোহনী আকর্ষণ,
তা'তে ঠকবে,
বিভ্রান্তির কবলে হাবডুবু খেয়ে
পরিবেশকেও মজাবে ।। ৪০২ ।।
~শ্রীশ্রীঠাকুর (ধৃতি-বিধায়না ১ম)।।

Sunday, May 24, 2020

লক্ষীর ১০৮ নাম

                                         শ্রীশ্রী বড়মা


লক্ষীর ১০৮ নাম

১) প্রকৃতি ,২) বিক্রুতি , ৩) বিদ্যা , ৪) সর্বভূতহিতপ্রদা, ৫) শ্রদ্ধা , ৬) বিভূতি, ৭) সুরভি, ৮) পরমাত্মিকা , ৯) জয়প্রদা , ১০) পদ্মালয়া , ১১) পদ্মা , ১২) শুচী, ১৩) স্বাহা, ১৪) স্বাধা, ১৫) সুধা , ১৬) ধন্যা , ১৭) হিরন্ময়ী, ১৮) লক্ষ্মী , ১৯) নিত্যাপুষ্টা, ২০) বিভা, ২১) অদিত্যা, ২২) দিত্যা, ২৩) দীপা, ২৪) বসুধা, ২৫) ক্ষীরোদা, ২৬) কমলাসম্ভবা, ২৭) কান্তা, ২৮) কামাক্ষী, ২৯) ক্ষীরোদসম্ভবা , ৩০) অনুগ্রহাপ্রদা, ৩১) ঐশ্বর্য্যা , ৩২) অনঘা, ৩৩) হরিবল্লভী, ৩৪) অশোকা , ৩৫) অমৃতা, ৩৬) দীপ্তা, ৩৭) লোকাশোকবিনাশিনী, ৩৮) ধর্মনিলয়া, ৩৯) করুণা, ৪০) লোকমাতা, ৪১) পদ্মপ্রিয়া, ৪২) পদ্মহস্তা, ৪৩) পদ্মাক্ষী , ৪৪) পদ্মসুন্দরী, ৪৫) পদ্মভবা, ৪৬) পদ্মমুখী, ৪৭) পদ্মনাভপ্রিয়া, ৪৮) রমা, ৪৯) পদ্মমালাধরা , ৫০) দেবী,
৫১) পদ্মিনী, ৫২) পদ্মগন্ধিণী , ৫৩) পুণ্যগন্ধা, ৫৪) সুপ্রসন্না, ৫৫) শশীমুখী , ৫৬) প্রভা, ৫৭) চন্দ্রবদনা, ৫৮) চন্দ্রা , ৫৯) চন্দ্রাসহোদরী , ৬০) চতুর্ভুজা , ৬১) চন্দ্ররূপা , ৬২) ইন্দিরা, ৬৩) ইন্দুশীতলা, ৬৪) আহ্লাদিণী, ৬৫) নারায়নী , ৬৬) বৈকুন্ঠেশ্বরি ৬৭) হরিদ্রা ৬৮) সত্যা , ৬৯) বিমলা, ৭০) বিশ্বজননী, ৭১) তুষ্টি, ৭২) দারিদ্রনাশিণী, ৭৩) ধনদা , ৭৪) শান্তা, ৭৫) শুক্লামাল্যাম্বরা , ৭৬) শ্রী, ৭৭) ভাস্করী , ৭৮) বিল্বনিলয়া , ৭৯) হরিপ্রিয়া , ৮০) যশস্বীনি , ৮১) বসুন্ধরা , ৮২) উদারঙ্গা, ৮৩) হরিণী , ৮৪) মালিনী, ৮৫) গজগামিনী , ৮৬) সিদ্ধি , ৮৭) স্ত্রৈন্যাসৌম্যা , ৮৮) শুভপ্রদা, ৮৯) বিষ্ণুপ্রিয়া , ৯০) বরদা , ৯১) বসুপ্রদা, ৯২) শুভা , ৯৩)চঞ্চলা , ৯৪) সমুদ্রতনয়া , ৯৫) জয়া , ৯৬) মঙ্গলাদেবী, ৯৭) বিষ্ণুবক্ষাস্থলাসিক্তা , ৯৮) বিষ্ণুপত্নী, ৯৯) প্রসন্নাক্ষী , ১০০) নারায়নসমাশ্রিতা ,
১০১) দারিদ্রধ্বংসিণী, ১০২) কমলা, ১০৩) সর্বপ্রদায়িনী, ১০৪) পেঁচকবাহিণী, ১০৫) মহালক্ষ্মী, ১০৬) ব্রহ্মাবিষ্ণুশিবাত্মিকা , ১০৭) ত্রিকালজ্ঞানসম্পূর্ণা, ১০৮) ভুবনমোহিনী।
প্রাতঃকালে মা লক্ষ্মীর নিম্নলিখিত নাম উচ্চারনে দারিদ্রতা নিবারণ হয়ঃ-

Wednesday, May 20, 2020

সুবিবাহ ও সুপ্রজনন প্রসঙ্গে

সুবিবাহ ও সুপ্রজনন বর্তমান সময়ে কত প্রয়োজন সেই বিষয়ে আলোচনা-
আলোচনার বিষয়বস্তু:
১) সুবিবাহ কি?
২) পাত্র ও পাত্রী নির্বাচনের শর্তাবলী
৩) অনুলোম ও প্রতিলোম বিবাহ
৪) বৈবাহিক জীবন
৫) সুপ্রজননও বৈজ্ঞানিক সূত্র
৬) ড. রেবতী মোহনের একটি বর্ণনা
৭) শ্রীশ্রী ঠাকুরের সাথে বিবাহ বিষয়ে আলোচনা

বিবাহ আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। দশবিধ সংস্কার ও ঋষির বিধান হিসেবে আমাদের জীবনে বিবাহ জরুরি। সুপ্রজনন ,বংশ পরম্পরা রক্ষা,সামাজিক জীবন রক্ষা, পরস্পরের দেখাশুনা ও পারিবারিক জীবন পরিপূর্ণতার জন্য বিবাহের প্রয়োজন । যুগপুরুষোত্তম শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সুবিবাহ ও সুপ্রজননের উপর বিশেষ জোর দিয়েছেন। সুবিবাহ ও সুপ্রজনন ছাড়া আমাদের সমাজে সুসন্তান আসা সম্ভব নয়। কারন সুসন্তান ছাড়া সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। কারন হবে কাকে দিয়ে মানুষকে দিয়েই তো। ভালো মানুষ যদি না হয় ভালো জাতি কি করে হবে। আবার ভালো মা যদি না হয় তাহলে ভালো মানুষ আসবে কোথা থেকে। আবার ভালো বিবাহ না হলে ভালো মা-বাবা হবে না। তাই সব বিষয়গুলো একটার সাথে একটা জড়িত। তাই  বিবাহের সাথে Eugenics,  এটা যে কত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।  
          দেশকে আমরা যদি সুসন্তান উপহার দিতে চাই তবে আমাদেরকে এই দুটি বিষয়ের উপর জোর দিতে হবে-সুবিবাহ ও সুপ্রজনন। আজকে আমাদের দেশে এই যে সৎমানুষের এত অভাব, মূল্যবোধের অভাব, সৎনেতার অভাব সব ঐ সুবিবাহ ও সুপ্রজননের অভাবে। আজকে যত ধরনের অপরাধ আছে সব বৃদ্ধি পাচ্ছে কেন ? তার কারন খারাপ মানুষ আর খারাপ আত্মা। তারা শয়তানের কবলে পড়ে মানুষের ক্ষতি করছে। মানুষ পাপে অন্ধ হয়ে সৎ পথ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। মানুষের মধ্যে দয়া ,মায়া কমে যাচ্ছে নৃশংসতা বেড়ে যাচ্ছে। সব ঐ বিকৃত জন্মের ফল। গাছ যেমন ফলও তেমনি হতে বাধ্য। আবার ভূমি ঊর্বর না হলে ভালো বীজ দিলেও তাতে ভালো ফসল হবে না। তাই ভালো ফসলের জন্য দুটার সমান গুরুত্ব রয়েছে। ভালো বীজ যদি মরুভূমিতে লাগানো হয় তা বড় গাছ হয়ে বেড়ে উঠবে না। আবার একটি ধৈঞ্চা গাছের বীজ যদি উর্ব্বর জমিতে লাগাই আর বটগাছের আশা করি তা কখনো পাওয়া যাবে না। ভালো সন্তানের জন্য ভালো মা-বাবা দরকার। ভালো মা বাবা হলে ভালো সন্তান-সন্ততি আসবে।
ভালো সন্তান কত যে জরুরি তা সবাই জানি। সনাজের সুষম উন্নয়ন করতে গেলে আগে চাই ভালো মানুষ। আর ভালো মানুষের জন্য লাগবে সুবিবাহ। ঠাকুর বলেছেন, বড় বড় আত্মা ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা পৃথিবীতে আসতে পারছে না। কারন তারা ভালো মা পাচ্ছে না। কারন বড় এরোপ্লেন নামতে গেলে যে, বড় রানওয়ে দরকার, সেইরকম এয়ারপোর্ট দরকার। তবেই না বড় বিমান সুন্দরভাবে নামতে পারবে।
 
১) সুবিবাহ কি?

বিবাহ মানে হচ্ছে -বিশেষ রূপে বহন করা। স্ত্রী স্বামীকে বহন করবে। আবার স্বামী স্ত্রীকে বহন করবে। স্ত্রী তার স্বামীর সাথে তার জীবনটা বহন করে নিয়ে যাবে। স্ত্রী স্বামীর সংস্কার ও আদর্শ বহন করবে। স্ত্রী সন্তান প্রজননের মধ্যে দিয়ে স্বামীর বংশপরম্পরাকে বহন করে নিয়ে যাবে। সুঃখে দুঃখে স্বামীর সাথে জীবনটাকে স্ত্রী সহন করে নিয়ে যাবে। আবার স্বামী তার কর্মময় জীবনের সাথে স্ত্রীকে ভরণ-পোষণ, স্নেহ, ভালোবাসা দিয়ে বহন করে নিয়ে যাবে। স্বামী-স্ত্রী দুজন-দুজনকে প্রকৃষ্টরূপে বহন করতে পারেন তবে তাদের মধ্যে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠবে এবং সংসারটা স্বর্গরূপে গড়ে উঠবে।
সুবিবাহ বলতে সবর্ণে ও ভিন্ন গোত্রে বংশ ,শিক্ষা,স্বাস্থ্য, অর্থ, সংস্কার, আদর্শ সব দেখেশুনে বিবাহ দেওয়া। সঠিক পাত্র ও পাত্রী নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে সংগতিপূর্ণভাবে বিয়ে দেয়া। তাতে স্বামী-স্ত্রী দুজনে দুজনকে পেয়ে সুখী হয় ও শান্তি অনুভব করে। দুজন দুজনকে নিয়ে আনন্দিত থাকে।পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন, বৈবাহিক জীবন, আধ্যাত্মিক জীবন, বাস্তবিক জীবন, ব্যক্তিগত জীবন, অর্থনৈতিক বিষয়, প্রজননগত বিষয় সবদিক চিন্তা করে বিবাহ দেয়া জরুরি। পরস্পরের বোঝাপড়া, ভালোবাসা, আন্তরিকতা, শ্রদ্ধাবোধ, দায়িত্ববোধ সব দেখা জরুরি। আচরনগত বৈশিষ্ট্য, খাদ্যাভাস, উপার্জন এসব দেখলে ভবিষ্যতে সমস্যা না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সুবিবাহ হলে পারিবারিক জীবন মধুর হয় ও সুপ্রজননের জন্য সুবিধা হয়।
শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র  তাঁর বাণীতে বলেছেন,

           উন্নয়ন আর সুপ্রজনন
                            এই তো বিয়ের মূল,
          যেমন তেমন করে বিয়ে 
                           করিস নাকো ভুল।। 

বিয়েটা ছেলে খেলা নয়। যেমন তেমন করে বিয়ে করে ফেললাম তাতে শুধু স্বামী স্ত্রীর ক্ষতিই নয় এটা বংশ পরম্পরার ক্ষতি, সমাজের ক্ষতি, দেশের ক্ষতি। এই ভুল শুধরানোর কোন ঔষধ নেই। কোন ভাবেই এটা শুধরানো যায় না। তাই বিবাহের বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
 
২) পাত্র ও পাত্রী নির্বাচনের শর্তাবলীসমূহঃ

 পাত্র-পাত্রী নির্বচনের শর্তাবলী কি কি তা জানা অত্যন্ত জরুরি। এই জায়গাটাতে আমরা সবাই ভুল করি। আমাদের শর্তগুলো জানা থাকলে আমাদের ভুল হবে কম।
পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে-বর্ণ,গোত্র,বংশ,শিক্ষা,স্বাস্থ্য, সংস্কার, উপার্জন, আচার-আচরন, পরিবারের সদস্য, পারিবারিক ইতিহাস সব বিষয় দেখা জরুরি।
যুগপুরুষোত্তম শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র যেসব নিয়ম কানুন বলেছেন সে বাণীগুলো নিচে দেওয়া হলোঃ
 

 
বিবাহে উদ্বৰ্দ্ধন ও সুপ্রজনন



      বিবাহ 
                   মানুষের
                         প্রধান দুইটি কামনাকেই
                           পরিপূরণ করে;-
       তার একটি
                       উদ্বৰ্দ্ধন,
                           অন্যটি সুপ্রজনন;-

               অনুপযুক্ত বিবাহে
                        এই  দুইটিকেই 
                        খিন্ন করিয়া তোলে;
              সাবধান!
              বিবাহকে খেলনা ভাবিও না-
                      যাহাতে
                             তোমার জীবন
                                ও
                                  জনন
                                        জড়িত৷
নারীর নীতি, বাণী-৭২, পৃষ্ঠা -১০৭-১০৮৷
 জননীত্বে জাতি 

নারী হইতে জন্মে 
                    ও বৃদ্ধি পায়- 
            তাই নারী 
                     জননী,- 
আর, এমনই করিয়া
             সে 
                  জাতিরও জননী,
 তাহার শুদ্ধতার উপরই 
        জাতির শুদ্ধতা নিৰ্ভর করিতেছে,- 
স্খলিত নারী-চরিত্র হইতে 
       ব্যৰ্থ জাতিই 
              জন্মলাভ করিয়া থাকে -
       বুঝিও-
            নারীর শুদ্ধতার  
                          প্রয়োজনীয়তা কী!  
   বরণের শ্রেষ্ঠ ক্ষেত্র

     এই  বৰ্ণ ও বংশানুক্রমিকতার
             ভিত্তির উপর
            বোধ, বিদ্যা, চরিত্র ও ব্যবহার 
                  যেখানে 
                        পুষ্ঠ ও পবিত্র,- 
           সেই হইল তোমার
                         বরণ করিবার 
                                   শ্রেষ্ঠ ক্ষেত্র,-
           মনে রাখিও 
                   তোমার ভালোবাসা 
                            যেখানে- যেমনভাবে 
                           ন্যস্ত হইবে- 
               ফলের উদ্ভবও 
                          তেমনতর হইবে
                                        সন্দেহ নাই-
                                           বুঝিয়া চলিও। 
নারীর নীতি, বাণী-৭৪, পৃষ্ঠা-১১১-১১২।

 বরণে বিচার 

   বরণ করিতে হইলেই দেখিও- 
         স্বামীর আদর্শ কি বা কেমন,
   তাঁহার আরাধনায় 
                চেষ্টা ও কর্মের আগুনে 
     তোমাকে আহুতি দিয়া সার্থক হওয়ার 
      প্রলোভন 
       তোমাকে প্রলুব্ধ করে কিনা; 
   আর, তুমি যাহাকে বরণ করতে চাও,
    সে 
     তাঁহাতে কেমনতর কতখানি-
   কারণ, তুমি তাঁহার সহধর্মিনী হইতে যাইতেছ;
           ইহাতে যদি তুমি উদ্বুদ্ধ হও,  
       আর, জাতি, বর্ণ, বংশ ও বিদ্যায়-
     যদি তোমার বরণীয় যিনি-
     তিনি সর্বতোভাবে 
       তোমা হতে শ্রেষ্ঠ হন-  
  এবং তোমার পূর্বপুরুষের অর্ঘনীয় বলিয়া 
       বিবেচনা কর -
     তবে- তাঁহাকে বরণ করিলে
                বিপত্তির হাত হইতে 
      এড়াইতে পারিবে- 
                        এটা ঠিক জানিও।

স্বামী
যদি তুমি তোমার পুরূষকে
    তোমার অস্তিত্বের মত
       অনুভব করিতে পার,
আর, তাহা করিলে-
বস্তুত: তোমার চরিত্রের ভিতর-দিয়া
 চাল-চলন, ভাব-ভাষা ইত্যাদির অভিব্যক্তি
        যদি ঘোষণা করে-
          সে তোমার অস্তিত্ব-
জানিও "স্বামী-সম্বোধন"
           তখনই 
     তোমার জয়যুক্ত হইবে।।
নারীর নীতি, বাণী-১৭৪, পৃষ্ঠা-১৭৪। 

সতীত্ব
যিনি স্বামীর  জীবন, যশ ও বৃদ্ধিকে
   উন্নতির পথে উচ্ছল করিয়া-
সম্বর্দ্ধনা, সহানুভূতি  , পারিপার্শ্বিকে প্রতিষ্ঠা,
    সেবা, শুশ্রুষা, সাহায্য ও সামর্থ্যে
           অবিচলিত রাখিয়া,
নিজের জীবন,যশ ও বৃদ্ধিকে অটুট করিয়া,-
ব্যষ্টি ও সমষ্টিতে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন-
        সতীত্ব তাঁহাতেই স্বার্থক,-
যদি নারীজন্মই লাভ করিয়াছ,
   সতীত্বকে আলিঙ্গন করিয়া
           সার্থক হও,
              জীব ও জগৎকে
                   সার্থক করিয়া তোল।
নারীর নীতি,বাণী ১৭৩,পৃষ্ঠা-২৫৯। 

প্রজননে-নারী ও পুরুষের বৈশিষ্ট্য

ধাতু বা temperament হইতেছে
   বৈধানিক বৈশিষ্ট্য
( Characteristic of the system)
যাহা অনেকখানি-
      মানুষের বোধ,চিন্তা, চরিত্র
          ও চলনকে নিয়ন্ত্রিত করে;
তাই, পুরুষের বৈশিষ্ট্য
                জীবনকে উপ্ত করা-
    নারী সেখানে ধারন করিয়া মূর্ত্ত করে
             ও বৃদ্ধিতে নিয়োগ করে,-
আর, এটা সাধারণতঃ
         এককালীন একককে;-
পুরুষ এই সময়ে বহুতে উপ্ত করিতে পারে,
                        তাই
নারীর বৈশিষ্ট্য একগামিনী হওয়া-
     আর, ইহা তাহার
সুস্থ মনের সম্পদ,-
পুরুষ কিন্তু স্বভাবতই
       বহুগমন-প্রবণতা লইয়া
           জীবনধারন করে;-
তাই-
তোমার স্বামী
আদর্শে, চরিত্রে, জ্ঞানে ও সেবায়
            উচ্ছল থাকিয়াও-
বহুভার্য্যাপরায়ন হন,
আর, তাহা যদি তোমার স্বামীর পক্ষে 
             অমঙ্গলপ্রদ না হয়,
    দুঃখিত হইও না,
ঈর্ষ্যান্বিত হইও না-
বরং 
ভালবাস, যত্ন লও-
দেখিবে-তোমাতে তোমার স্বামী
আরও তুমি-প্রবল হইয়া উঠিয়াছেন
      -চিন্তা করিও না।
নারীর নীতি,বাণী-১৫৬। 

অভিগমনে শ্রদ্ধা ও সজ্জা

স্বামীর নিকট সুসজ্জিত হইয়া,
       সু-ভাব ও চিন্তা-পরায়ণ হইয়া,
শ্রদ্ধা ও অভিনিবেশ-সহকারে
তাঁহার অভিগমন করাই রীতিই
      বলিয়া দেয়
স্বামী কেমনভাবে উদ্দীপ্ত
ও তোমাতে আনত হইলে
       সুসন্তান-লাভ ঘটিয়া থাকে,-
আর, ইহা সুপ্রজননের একটি ধারা।
নারীর নীতি,বাণী-১৪৯,পৃষ্ঠা-২২২।

সুসন্তান জননে
তোমার নিষ্ঠা, অনুরক্তি, ভাব ও ভক্তিতে
    অনুরঞ্জিত হইয়া
          তোমার স্বামীকে 
              সৎ ও সুস্থভাবে উদ্দীপ্ত করিয়া
              যখনই তোমাতে আনত করাইবে,-
সেই হইতেছে প্রকৃষ্ট লক্ষণ
        যে তুমি
    সৎ,সুস্থ ও দীপ্তিমান সন্তানের  
                                 জননী হইবে-
                                   সন্দেহ নাই,-
শাস্ত্রে সুসন্তানলাভার্থ 
     যাগ, যজ্ঞ, ক্রিয়া-কর্ম্মাদির
                    উদ্দেশ্যও এই।
নারীর নীতি,বাণী-১৪৮, পৃষ্ঠা-২২১।
নারী-জননে ও সেবায়
তোমার স্বামী যেমনই হউন না কেন,-
   যদি তাঁহার উচ্চ-বংশানুক্রমিকতা থাকে-
         তুমি তাঁহাকে যেমনভাবে
                উদ্দীপ্ত ও আনত করিয়া তুলিবে,
ঠিক জেনো-
  অবিকল তাহাই-
              সন্তানরূপে পাইবে;
আর, ইহাও ঠিক,
      তোমার স্বামী-স্ত্রীর
         ভাব ,বাক্য, ও আচার-ব্যবহার
          ভূমিষ্ঠ সন্তানের
   শিক্ষা ও চরিত্রের মূলভিত্তি।
নারীর নীতি, বাণী-১৪৬,পৃষ্ঠা-২১৯।
বর-মনোনয়নে উপযুক্ততা
নারী যখন গর্ভধারণক্ষম হয়,
তখনই প্রকৃতি তাহাকে
     পুরুষ-মনোনয়নের ক্ষমতায়
              অধিরূঢ় করিয়া তোলে;-
আর,
নারী যদি বরকে স্বেচ্ছামত
      মনোনয়ন করিতে চায়-
         তখনই কেবল তাহা পারে সে;
নতুবা
         পিতামাতা সর্ব্বতোভাবে শ্রেষ্ঠ দেখিয়া
          যাহাকে বরণ করিবেন
              তাহাদের কন্যার জন্য-
তিনিই কন্যার বর বলিয়া
পরিগনিত হইবেন-
       ইহাই শাস্ত্রের নীতি।
নারীর নীতি, বাণী-১৪০,পৃষ্ঠা ২১২।
অমনোনীত হীনপাত্রস্থতায়
রজস্বঃলা কন্যার অমতে
        বা অমনোনয়নে , কিংবা বলবাধ্য করিয়া
           যদি তাহাকে হীনপাত্রস্থ করা হয়-
              তাহা  অন্যায় ও অধর্ম,-
তাই, শাস্ত্রে আছে
      "দত্তামপি হরেৎ কন্যাং
          শ্রেয়াংশ্চেদ বর আব্রজেৎ।"
তুমি যদি নিজে কোন পুরুষকে বাগদান 
          বা বরণ করিয়া না থাক-
বা বরণ-ব্যাপারে তোমার অভিমত
        না-ই থাকিয়া থাকে-
এমতাবস্থায়-
      তোমার পিতামাতা কিংবা
             গুরুজনদিগকে
                বলিও
                  বুঝাইও-
                      নিবৃত্ত হইও।
নারীর নীতি, বাণী-১৪১,পৃষ্ঠা-২১৩-২১৪।
বাগদানে
 যদি কেহ
            নিজের অবস্থা বুঝিয়া,
                অন্যতে নিঃসংশয় হইয়া
কোন-কিছুর জন্য বাগদান করে-
তাহাকেই
       যে বিষয়ের জন্য বাক্যদান করিয়াছে-
তদ্বিষয়ে বাগদত্ত বা বাগদত্তা
                           বলিয়া অভিহিত করা যায়;-
তুমি যদি তোমার অবস্থা ও সামর্থ্য বুঝিয়া
               কোন পুরুষের সর্ব্ববিষয়ে নিঃসংশয় হইয়া
                    তোমাকে দান করিবার জন্য
                       বাক্যদান করিয়া থাক-
           তাহা হইলে তুমি বাকদত্তা  হইলে;
এই দানই তোমার প্রকৃত বিবাহ,
         যাহাকে দান করিলে
           তিনি গ্রহণ করুন
              বা না করুন;
আর, যদি তিনি গ্রহন নাই করেন,
     তাহা হইলেও
       অন্যকে পুনরায় বাগদান করিতে পার না;
          আর ইহা করিলে
            ধর্ম্মের দিক দিয়া
               তুমি পতিতা হইবে-
তাই,
     সর্ব্ববিষয়ে নিঃসংশয় না হইয়া
               কোন পুরুষে
                    তুমি বাগদান করিও না;-
আর, যদি করিয়াই থাক-
যদি পার,-ফিরিও না-
      ফিরিলে দুর্ব্বলতাকে অবলম্বন করিয়া
                         পাতক
আজীবন
তোমার পিছু লইতে পারে-
        হিসাব করিয়া চলিও।
নারীর নীতি,বাণী-১৩৯,পৃষ্ঠা-২১১। 

সুপ্রজননে নিষ্ঠা
ক্ষীণমতির
কোন-কিছুতে লাগোয়া থাকা
         অত্যন্ত কষ্টকর বলিয়া মনে হয়;-
আর, এই লাগোয়া থাকা অভ্যাসকে
          যতই তাচ্ছিল্য করা যায়,
মন ততই 
দুর্ব্বল,চঞ্চল,ক্ষীণতর-চিন্তাসম্পন্ন হয়-
তাই-
     তাহার মানসিক অস্থিরতা
         জীবনকে প্রায় অবহনীয়
           করিয়া তোলে;
আবার,
এইরূপ অস্তির ও  ক্ষীণমনা স্ত্রী
     তাঁহার স্বামীকে তাহার  ভাবধারায়
        এমনতরভাবে উদ্বুদ্ধ করিতে পারে না-
            যাহাতে তাঁহার মস্তিষ্ক
                ভাবের আবেগে
স্ফীত ও উৎফুল্ল হইয়া 
         নিবিড়ভাবে আলিঙ্গন করে;
এবং তাহারই ফলে
    সে এমনতর সন্তানের গর্ভধারিনী হয়-
যাহার ক্ষীণ ও চঞ্চল মন ধাতুগত হইয়া থাকে,-
  পরে তাহা অতি দুষ্কর হইয়া থাকে,
আর,
      অল্পায়ু,বেকুব ও রোগসঙ্কুল সন্ততির
             ইহাও একটি প্রধান কারন;
তুমি যদি
          অমনতর হইয়া থাক,
             লাগোয়া  থাকা বা নিষ্ঠাকে
                     যত্নে
              চরিত্রগত করিতে চেষ্টা কর;
 যদি পার-
এ দুর্দ্দৈবের হাত হইতে
    এড়াইতে,-
ভাবিও না।
নারীর নীতি, বাণী-৯৮,পৃষ্ঠা-১৪৯-১৫০,।

বিবাহে বয়সের পার্থক্য
যাহাকে পতিবরণ করার
            সম্ভাবনা আছে
তাঁহাকে
      শুধু বন্ধুর মতন চিন্তা করিও না,
বরং ভাবিও-
         দেবতার মত
           আচার্য্যের মত;
    ভাব ও বয়সের নৈকট্য
          মানুষের
          বোধ ও গ্রহণক্ষমতার
           দুরত্ব ঘটাইয়া থাকে;-
তাই-
স্বামী-স্ত্রী বয়সের পার্থক্য
    পুরুষের যে-বয়সে
প্রথম সন্তান হইতে পারে
      ততখানি 
        হওয়াই উচিত।
নারীর নীতি,বাণী-৮২,পৃষ্ঠা-১২৪-১২৫।
প্রজনন নিয়ন্ত্রনে- নারীর ভাব ও দায়িত্ব 
বিবাহের অনেকগুলির মধ্যে
       একটা প্রধান প্রয়োজন
              সুপ্রজনন,
আর,
      এই সুপ্রজননকে নিয়ন্ত্রন করে
           নারীর ভাব-
যাহা পুরুষকে উদ্দীপ্ত করিয়া
           আনত করে;
      তবেই
               নারী যাহাকে
              বহন করিয়া, ধারন করিয়া
              কৃতার্থ ও সার্থক হইবে,-
বিবেচনা করিয়া
      তেমনতর সর্ব্ববিষয়ে শ্রেষ্ঠ
        পুরুষের সহিতই
          পরিণীত হওয়াই উচিত;
অতএব
         বিবাহে পুরুষকে বরণ করার ভার
         নারীতে থাকাই সমীচীন বলিয়া
                      মনে হয়,-
           তাহা নয় কি?
তুমিই বিবেচনা করিয়া ও গুরুজনের সহিত
                           আলোচনা করিয়া
তোমার বরকে বরণ করিও। 
নারীর নীতি, বাণী-৮১, পৃষ্ঠা-১২২-১২৩।
বিবাহে -অনুলোম ও প্রতিলোম 
অনুলোম যেমন 
                 উন্নতকে প্রসব করে,
                  প্রতিলোম তেমনিই
               অবনতিকে বৃদ্ধি করে,-
তাই
      প্রতিলোম বিবাহ 
           এমনতর পাপ-
যাহা
      নিজের বংশকে 
          ধ্বংসে অবসান তো করেই,-
তাহা ছাড়া
            পারিপার্শ্বিক বা সমাজকেও 
                 ঘাড় ধরিয়া
                   বিধ্বস্তির দিকে
                      চালিত করে,-
অসতী স্ত্রীর নিষ্কৃতি 
          বরং সম্ভব 
            কিন্তু প্রতিলোমজ হীনত্বের 
                            অপলাপ
                              অত্যন্তই দুষ্কর। 
নারীর নীতি, বাণী-৮০, পৃষ্ঠা- ১২০-১২১।

বরণ-সেবা ও স্তুতির আকুতিতে বিবাহ
যদি কোন পুরুষের
           আদর্শপ্রাণতা ও সর্ব্বপ্রকারে শ্রেষ্ঠত্ব 
              তোমাকে শ্রদ্ধাভক্তিতে
               অবনত ও নতজানু করিয়া
         তাঁহার সেবায়
           কৃতার্থ করিতে চায়-
         অন্তর হইতে মুখে
           যাহার স্তুতিগান
              উপচিয়া উঠে,
          তাঁহাকে তুমি বরণ করিতে পার-
              আত্মদান করিতে পার,
           তাঁহার স্ত্রীত্ব লাভ করিয়া 
             স্তুতি ও সেবায়
               ধন্য হইবে-
               সন্দেহ নাই। 
নারীর নীতি,বাণী-৭৯, পৃষ্ঠা-১১৯।
বরেণ্যে -বরণ
পুরুষ-যিনি সর্ব্বপ্রকারেই
          তোমা হইতে শ্রেষ্ঠ-
ও তোমাতে
           তোমার যে-পূর্ব্বপুরুষগণ অধিষ্ঠিত
                  তাহাদের বরেণ্য,-
      যাঁহার সহিত
    আদর্শে আহুতি হইবার প্রলোভন
                তোমাকে-
সহ্য ও বহন করিবার উন্মাদনায়
           উদ্দাম করিয়া তুলিয়াছে-
                 তুমি
           তাঁহারই বধু হও-
           সার্থক হইবে। 
নারীর নীতি,বাণী-৭৭,পৃষ্ঠা-১১৭।
 
 বিবাহে বহন-ক্ষমতা
প্রকৃষ্টরূপে বহন করাকেই
                    বিবাহ বলে,
যে বহন করিবে
(আর এ-বহন যত প্রকারে হইতে পারে)
সে যদি-
     যাহাকে বহন করিতে হইবে
            তাহা হইতে
      সর্ব্বপ্রকারে-সর্ব্ববিষয়ে
           সমর্থ না হয়-
             তবে কি-করিয়া হইতে পারে?
যাঁহাকে তুমি-তোমাকে সর্ব্বপ্রকারে
           বহন করিবার জন্য
               প্রার্থনা করিতেছ,
      তিনি তোমার-সে প্রার্থনা
পূরণ করিবার
       উপযুক্ত কিনা,
          বিবেচনা করিয়া
               নিজেকে দান করিও,-
                   পতন, বেদনা ও আঘাত হইতে
                          ঊত্তীর্ণ হইবে।।  
নারীর নীতি,বাণী-৭৬,পৃষ্ঠা-১১৫-১১৬।

বরণের শ্রেষ্ঠ ক্ষেত্র
এই বর্ণ ও বংশানুক্রমিতার 
         ভিত্তির উপর-
          বোধ, বিদ্যা, চরিত্র ও ব্যবহার
               যেখানে
                 পুষ্ট ও পবিত্র,-
         সেই হইল তোমার
               বরণ করিবার শ্রেষ্ঠ ক্ষেত্র,-
        মনে রাখিও-
              তোমার ভালোবাসা
                  যেখানে-যেমনভাবে
                    ন্যস্ত হইবে-
    ফলের উদ্ভবও
          তেমনতর হইবে
            সন্দেহ নাই-
                বুঝিয়া চলিও।
নারীর নীতি, বাণী-৭৪,পৃষ্ঠা-১১-১১২।

বরণে -বিচার 
বরণ করিতে হইলেই দেখিও-
                স্বামীর আদর্শ কী বা কেমন,
তাঁহার আরাধনায়
                চেষ্টা ও কর্ম্মের আগুনে
            তোমাকে আহুতি দিয়া সার্থক হওয়ার
                     প্রলোভন
                      তোমাকে প্রলুব্দ করে কিনা;
আর, তুমি যাহাকে বরণ করিতে চাও,
     সে
        তাঁহাতে কেমনতর ও কতখানি-
কারন, তুমি তাহার সহধর্ম্মিণী হইতে যাইতেছ;
          ইহাতে যদি তুমি উদ্বুদ্ধ হও-
                আর, জাতি,বর্ণ, বংশ, বিদ্যায়-
                     যদি-তোমার বরণীয় যিনি-
        তিনি সর্ব্বতোভাবে
                তোমা হতে শ্রেষ্ঠ হ'ন-
এবং তোমার পূর্ব্বপুরুষের অর্ঘনীয় বলিয়া
                      বিবেচনা কর,-
      তবে-তাঁহাকে বরণ করিলে
          বিপত্তির হাত হইতে
              এড়াইতে পারিবে-
                 এটা ঠিক জানিও। 
নারীর নীতি,বাণী-৭৩,পৃষ্ঠা-১০৯-১১০।  

বিবাহে উদ্ধর্দ্ধন ও সুপ্রজনন 
বিবাহে
      মানুষের
           প্রধান দুইটি কামনাকেই
               পরিপূরণ করে;-
    তার একটি
          উদ্ধর্দ্ধন,
               অন্যটি সুপ্রজনন;-
         অনুপযুক্ত বিবাহে
              এই দুটিকেই
                     খিন্ন করিয়া তোলে;
               সাবধান!
                         বিবাহকে খেলনা ভাবিও না-
             যাহাতে
                  তোমার জীবন
                           ও
                      জনন
                             জড়িত।
নারীর নীতি,বাণী-৭২, পৃষ্ঠা-১০৭-১০৮।

 কল্পনাপ্রহেলিকায় স্বামী-বরণ 

 যে-মেয়েরা
            স্বামীকে
               তাহাদের কল্পনার মত করিয়া
               পাইতে চায়,-
      বাস্তবে উদ্বুদ্ধ হইয়া
            স্বামীকে বরণ করে না,-
তাহারা
        স্বামীর সহিত
                যতই পরিচিত হয়,
                      ততই
                        নিরাশ হয়;-
আপসোস, দোষদৃষ্টি, জীবনে ধিক্কার ইত্যাদি
       তাহাদের
           পার্শ্বানুচর হইয়া
                 অবসাদে অবসান হয়,-
    আর, সেই হতভাগ্য পুরুষেরও
              শেষ নিঃশ্বাস
                      আমনি-করিয়াই
                         মরণে বিলীন হইয়া যায়;
             ভুল করিও না,
                  অমনতর মরণকে
                       আমন্ত্রন করিও না।
নারীর নীতি, বাণী-৭০, পৃষ্ঠা-১০৩-১০৪।

বরণে বংশানুক্রমিতা 
পুরুষ আদর্শানুরাগ
              শ্রদ্ধা ও ভক্তি হইতে উৎপন্ন,-
   যাঁহা হইতে প্রেরণা পাইয়া,
                  কর্ম্মানুষ্ঠান করিয়া,
                     সেবা করিয়া-
   যে-বোধ ও জানার উৎপত্তি হয়,
 তাহা সন্তানের মূলগত ধাতুতে সংক্রামিত হইয়া
              যে-স্বভাবের সৃষ্টি হয়,
                        তাহাই তাহার
                             আদিম সংস্কার;
 তাহার এই সংস্কারই
                তাহার পারিপার্শ্বিক হইতে
                   বাঞ্চিত উপকরন সংগ্রহ করিয়া
                         বিবর্দ্ধিত হইয়া
                                  মানুষ হইয়া দাঁড়ায়;-
তবেই, মানুষের উন্নতির মূল উপদানই হইতেছে
         পুরুষপরম্পরাগত আদর্শানুরাগ হইতে উদ্ভূত
এই বংশানুক্রমিতা( cultural heredity);
  ইহা যেখানে শ্রেষ্ঠ-
             বরণ-ব্যাপারে তাহাই অগ্রগন্য ও আদরণীয়;
মনে রাখিও-
     এই বর্ণ ও বংশকে তাচ্ছিল্য করিলে 
      সবংশে যে তুমি মরণযাত্রী হইবে
          সে-সম্বন্ধে আর ভুল কোথায়?
নারীর নীতি, বাণী -৭১,পৃষ্ঠা-১০৫-১০৬। 

বরণে-শ্রেষ্ঠে নিকৃষ্টতায়

শ্রেষ্ঠে বংশানুক্রমতা (heredity)- সত্ত্বেও-
    এমন-কি বিদ্যা-ব্যবহারে শ্রেষ্ঠ থাকিয়াও 
      যদি কেহ হীন চিন্তা ও কর্ম্মানুষ্ঠানী হয়,
আর, তাহা কোন উচ্চ-আদর্শকে
      বহন ও প্রতিষ্ঠা না করিয়া
           স্বার্থকেই পরিপুষ্ট করে,-
এমনতর স্থলে
             শ্রেষ্ঠ হইলেও নিকৃষ্ট
                   বলিয়াই পরিগনিত হইবে-
তুমি
    বরণ-ব্যাপারে ইহা হইতে দূরে থাকিও,-
ইহাও
      শ্রেষ্ঠ বংশানুক্রমিতাকে
         অপঘাত করিয়া
            নিকৃষ্ঠকে নিমন্ত্রন করে।
নারীর নীতি, বাণী-১১৩,পৃষ্ঠা-১৭২।  

বর বরণে-অসংস্রব 

যদি  উপযুক্ত স্বামী লাভ করিতে চাও-
          পুরুষ হইতে দূরে থাকিও-
          কাহাকেও
                স্বামীভাবে
                  কল্পনা করিও না,-
কারন,
       ইহাতে
         মন
           কামলোলুপ হইয়া
              তোমার দৃষ্টিকে
                   অস্বচ্ছ করিয়া তুলিবে;
-কিন্তু যাঁহাকে স্বামী করিতে চাও
       তাঁহার ইষ্ট, আচার, বংশ, যশ, স্বাস্থ্য,
                    শ্রদ্ধা,জ্ঞান ইত্যাদি 
কাম্য, সহনীয় ও বহনীয় কিনা-
            অবলোকন করিও
  এবং
       মঙ্গালাকাঙ্ক্ষী গুরুজনের সহিত
             আলোচনা করিও
                        প্রাপ্তিতে ভ্রান্তি
                              কমই ঘটিবে ।
নারীর নীতি, বাণী-৬৬,পৃষ্ঠা-৯৬-৯৭।

অনুলোমে পূন্য-প্রতিলোমে পাপ 
অনুলোম-
       জীবন ও বৃদ্ধিকে
                ক্রমোন্নয়নে অধিরূঢ় করে বলিয়া
                    তাহা ধর্ম ও পূণ্যের প্রসবিতা;
আর, প্রতিলোম-সংসর্গ
          জাতির বংশানুক্রমিক অর্জ্জিত অভিজ্ঞতা
                            ও
          ব্যক্তিত্বের অপঘাত ঘটাইয়া-
           হীনত্বে সংবর্দ্ধিত ও পরিচালিত করিয়া
            মূর্ত্ত করে বলিয়া-
                       তাহা
           অধর্ম্ম,হীনতা ও পাপেরই 
                                       জননী ।
নারীর নীতি, বাণী-১১৪,পৃষ্ঠা-১৭৩। 

      
 নারীতে পূর্ব্বপুরুষ

গর্ব্বের সহিত স্মরণ করিও-
            তোমাতে যে জীবন প্রবাহিত হইতেছে,
তাহা তোমারে
             পূর্ব্ব-পূর্ব্ব পুরুষদিগকে বহন করিয়া;-
যাঁহাকে অর্ঘ্য দিয়া
           তোমার পূর্ব্ব-পূর্ব্ব পুরুষ
               প্রীত ও ফুল্ল হ'ন মনে কর,-
যাঁহার বা যে-বংশের চরণস্পর্শে
               তাঁহারা ধন্য হ'ন মনে কর,-
তুমি
      নতজানু হইয়া 
             তাঁহারই চরণে অবনত হইও,-
             তাঁহাকেই বরণ করিও,-
                 ‌‍'স্বামী'-সম্বোধন তাঁহাকেই করিও;-
আর, তোমার এই চিন্তা
ও সম্বোধনের ভিতর-দিয়া
    উৎফুল্লকন্ঠে তোমার পূর্ব্বপুরুষগনও 
            মঙ্গল বর্ষণ করিবেন;
নিন্দিত হইও না,
      তাঁহাদিগকে বেদনাপ্লুত করিও না,
          উদ্বুদ্ধ হও-উজ্জ্বল হও,-
বংশ ও জাতিকে উন্নত কর।
নারীর নীতি, বাণী-৬৯,পৃষ্ঠা-১০১-১০২।  
                     
৩) বৈবাহিক জীবনঃ



 মেয়েই তো মা-ড. রেবতী মোহন বিশ্বাস-এর বই থেকে একটি মায়ের সন্তান প্রজনন নিয়ে আলোচনা নিম্নে দেয়া হল। 

আপসোস ক’রে বললেন কমলা দেবী--দাদা, ছেলে এমন হবে জানলে কি আর স্বামীর সঙ্গে অমন ব্যবহার করতাম ৷

👍
শ্রীমতি কমলা রায়। বাপের বড় আদরের মেয়ে। বাবা দিল্লীতে একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী৷ গোঁড়া বৈষ্ণব। দিল্লীর মত অতি আধুনিক শহরে বাস করলেও এবং ইংরাজী শিক্ষায় শিক্ষিতা হলেও ধর্ম, কৃষ্টি ও কুলাচারের প্রতি নিষ্ঠা কমেনি কমলার। বিবাহ হয়েছে হাওড়া জেলার কোন এক সম্রাস্ত পরিবারে। কমলার স্বামী মিঃ রায় খুবই সজ্জন ব্যক্তি। চাকুরি করেন সরকারী সংস্থায়-বেশ উঁচু পদে৷ কমলাদেবীর তিন ছেলে, দুই মেয়ে৷ বড় ছেলে সবে কলেজে প্রবেশ করেছে। কমলাদেবী ও তার স্বামীর আশা ছিল ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ ধাপ পর্যস্তু পড়াবেন ৷ কিত্ত হতাশ হয়ে পড়েছেন, মহাবিদ্যালয়ের প্রথম ধাপেই দু’বার ডিগবাজি খাওয়ায়৷ একটা বিষয়েও পাশের নম্বর তুলতে পারেনি প্রথম বাৎসরিক পরীক্ষায় ৷ তদুপরি তার অবাঞ্ছিত ব্যবহারে শঙ্কিত হয়ে উঠেছেন উভয়ে।

👍
দুঃখ করে বললেন কমলাদেবী-- আমার পেটের ছেলে যে এমন হবে, তা স্বপ্নেও ভাবিনি। লেখাপড়া, আচার-আচরণ, স্বভাব-চরিত্রে যে ছেলেকে পাড়ার সকলেই খুব ভাল ছেলে বলত সে এমন কেন হল? পড়াশোনায় একদম মন সেই ঠাকুর দেবতার ওপরে শ্রদ্ধা-ভক্তির বালাই নেই। আগে ঘুম থেকে উঠে প্রার্থনা করত, ণ্ডরুজনদের সবাইকে প্রণাম করত। তা তো করেই না, উপরন্তু এত অনাচার সৃষ্টি করছে যা অসহ্য। কিছু বলতে গেলে অপমানজনক কথা বলে-বিশেষ করে ওর বাবার প্ৰতি ব্যবহার খুবই মর্মাস্তিক। ওনার মত মানুষ বিরল। ছেলে-ময়েরা যেন ওনার প্রাণ। ছেলে মেয়েদের কোন শখ-আহ্লাদ অপূর্ণ রাখেন না। সেই মানুষটিকে বাড়ী আসতে দেখে বিড়বিড় করে অসম্মানজনক কথাবার্তা বলবে। বলবে-এ ! রাজা সাহেব আসছে ! ভোঁদড় কোথাকার। আরও কত কি ! সেদিন সহ্য করতে না পেরে এক ধমক দিয়েছিলাম। ও ছুটে এসে ধাক্কা দিয়ে আমায় ফেলে দিল। কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন কমলাদেবী। ছেলের প্রতি ঘৃণা ও আক্রোশের অবরুদ্ধ আবেগ ভাষায় যেন প্রকাশ করতে পারছে না। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে বললেন--মনে হয় ও মানসিক বিকারগ্রস্ত। মাঝে মাঝে বেশ ভাল থাকে ৷ পাড়ার কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার নেই৷ যত রাগ সব যেন বাবার ওপরে। আমি প্রতিবাদ করি বলে আমার ওপরেও রাগ কম না।

👍
উনি ছেলেকে কিছু বলেন না। লোক জানাজানি হলে নিজেরই মনে লাগবে। তাই নীরবে সহ্য করেন ছেলের অত্যাচার।
👍
কিন্তু দাদা, আমার কাছে যে অসহ্য! ছেলের মুখে তার বাপ সম্বন্ধে কটুক্তি আর কত শোনা যায় বলুন? তাই সেদিন বলেছিলাম,--তুই বাড়ী থেকে দূর হয়ে যা। ভাবব, আমার একটি ছেলে মরে গেছে। ছেলে বলে কি জানেন ? বলে, বাড়ী থেকে দূর হয়ে যাব মানে? জন্ম দেবার সময় মনে ছিল না ? ছিঃ ছিঃ ছিঃ। ঘৃণায় ওর মুখ দেখতে ইচ্ছা করে না। ---- আবার কান্নার ঢেউ বেড়িয়ে এল কমলাদেবীর বুকের পাঁজর ভেদ ক’রে। বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে বললেন--আমার পেটে এমন ছেলে কেমন করে হলো, তাতো ভেবে পাই না।

👍
আমিও কি কম ভেবেছি। বেশ কিছু দিন ধরে স্টাডি করেছি ছেলেটাকে ৷ কত প্রশ্নই না করেছি ওর মনের গহন থেকে তথ্য তুলে আনবার অভিপ্রায়ে। মায়ের কড়া শাসন, ছেলেকে আঁচলে বেঁধে রাখবার অভ্যাস, পরিবেশে সবার সঙ্গে সহজভাবে মেলামেশা করতে না দেওয়া, শিশুমনের ওপরে নীতিকথার ভারী বোঝা চপিয়ে দেওয়া প্রভৃতি ক্রিয়াগুলির বিপরীত প্রতিক্রিয়ায় সাধারণতঃ যা ঘটে থাকে, তাই ঘটেছে ছেলেটির জীবনে। বয়সের তুলনায় ব্যক্তিত্ব থেকে ওঠেনি। গৃহপরিবেশে শৈশবের শিক্ষা ও অধুনা বৃহত্তর পরিবেশে বিরুদ্ধ চলনের দ্বন্দ্ব ও সংঘাতে সাম্য হারিয়ে ফেলেছে ছেলেটি৷ তাই মাঝে
মাঝে অশাভন ও বিদ্রোহী মনোভাব ফুটে ওঠে ওর আচরণে ৷




👍
কিন্তু বাবার প্রতি ঘৃণ্য মন্তব্যের কারণ আরও গভীরে বলে মনে হল। তাই মন থেকে সঙ্কোচ মুছে ফেলে কমলাদেবীকে বললাম -- এই ছেলে যখন আপনার পেটে আসে তখন মিঃ রায়ের প্রতি আপনার মনোভাব কেমন ছিল, তা জানতে পারলে সুবিধা হতো অবশ্য যদি আপনার আপত্তি না থাকে।
👍
পলকবিহীন চোখে কিছুক্ষণ চেয়ে রইলেন কমলাদেবী। মুখের ভাব দেখে মনে হল এতটুকু আপত্তি নেই তার--এই বিপত্তি থেকে রেহাই পওেয়ার তাগিদে দীর্ঘ সতের বৎসর পূর্বের স্মৃতি ভান্ডার খুঁজে স্বামীর প্ৰতি মনোভাব বের করে আনলেন কমলাদেবী। বললেন--আমার বিয়ে যখন হয় তখন আমি খুবই ছেলেমানুষ। মাত্র যােল বছর বয়স। শ্বশুরবাড়ী খুবই বনেদী বংশ৷ শ্বশুরের পাঁচ ছেলে। উনিই [ মিঃ রায় ] সবার ছোট ৷ শ্বশুরের খুবই আদরের ছিলাম। শাশুড়ীও স্নেহ করতেন খুব ৷ তবুও আমার অন্তরটা শুকিয়ে থাকত--স্বামীকে কাছে না পেয়ে। শ্বশুরবাড়ী আমার কাছে কারাগার মনে হতো। রাগ হতো স্বামীর ওপরে৷ চার ভাসুরই চাকরীর পরে রোজই বাড়ী ফিরে আসতেন ৷ কিন্তু উনি আসতে পারতেন না। ওনার চাকরির জায়গা বাড়ী থেকে অনেক দূরে। তবে শনিবারে বাড়ী এসে সোমবারে কাজে জাওয়ায় কোন অসুবিধা ছিল না। উনি তাও আসতেন না। ওনার ঐ একই কথা, ‘পরীক্ষাটা হয়ে গেলে প্রত্যেক শনিবার বাড়ী আসব! '








👍
ডিপার্টমেন্টাল পরীক্ষার জন্য তৈরী হচ্ছিলেন। প্রত্যেক সপ্তাহে চিঠি লিখতেন --“ তুমি তো জান, মাত্র চারশ টাকা মাইনের জুনিয়র আমি। এই পরীক্ষায় পাশ করলে ন’শ টাকা ময়না পাব। তেমােকে নিয়ে বাসা ভাড়া করে থাকতে পারব। তখন তোমাকে নিয়ে......" আর পড়তাম না। রেগে পুড়িয়ে ফেলতাম চিঠিখানা। তিন চার মাস পরে বাড়ী আসতেন একদিনের জন্য। তাতে আমার মন বিক্ষুব্ধ হয়ে থাকত। পশ্চিমের জানালা দিয়ে যেই দেখতাম যে উনি মাঠের পথে হেঁটে আসছেন, অমনি এবটা পেতলের কলসী নিয়ে পুকুর ঘাটে যেয়ে বসে থাকতাম। বাড়ী এসে মনে মনে এ-ঘরে সে-ঘরে খুঁজে বেড়াতেন ৷ বৌদিদের জিজ্ঞাসা করতেন- ‘ও কোথায় গেল ? ’
👍
রাত্রে খাওয়া-দাওয়ার পাট মিটে গেলে জায়েরা আমার জোর করে ঘরে পাঠিয়ে দিত। খাটের এক কোণে চোখ-কান গুজে পড়ে থাকতাম ৷ ওনার কোন কথার জবাব দিতাম না। আমার কাছে এগিয়ে আসত। আদর করতে চাইত। ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিতাম ৷ মুখে যা আসে তাই বলতাম। শেষে বিছানায় মুখ গুঁজে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতাম। উনি কি'স্তু আমাকে একটিও কটু কথা বলতেন না। কাতরভাবে আমাকে বোঝাতেন-লক্ষী আমার, শুধু শনিবার আর রবিবারে ক্লাস করতে পারি। তাই আসতে পারি না৷ আর একটা বছর কষ্ট কর। প্রমােশন পেলেই তােমাকে নিয়ে সোজা দক্ষিণ ভারতে পাড়ি দেব। হাত ধরে কাছে টানবার চেষ্টা করতেন। আমার মন ভিজত না। শুধু মনে হত, রাতের পর রাত একা বিছানায় শুয়ে চোখের জলে বালিশ ভিজিয়ে ফেলি তা দেখে না ! দক্ষিণ ভারতে নিয়ে যাবে ?
👍
রাগে, অভিমানে, ক্ষোভে, অশ্রদ্ধায় মনটা বিষিয়ে থাকত। ঠিক সেই অবস্থায় ঐ ছেলে পেটে আসে।
👍
তন্ময় হয়ে শুছিলাম কমলাদেবীর কাহিনী। লোকচক্ষুর অন্তরালে কত স্বামী-স্ত্রীর জীবনে কত বিচিত্র ঘটনাই না ঘটে। চোখের সামনে ভেসে উঠল ঋষির বাণী:-
👍
“রতিকালে উদ্দীপনী
শুভ সম্বেগ-প্লাবন ছাড়া
নারীর মনের বিপাক যেমন
সন্তানও হয় তেমনি ধারা৷”
👍
সৌভাগ্যের বিষয় আমাকে আর কিছু বলতে হল না। নীরবতা ভঙ্গ করে উদাস কণ্ঠে বললেন কমলাদেবী,-আজ বুঝতে পারছি ঠাকুর কেন বলেছেন-
👍
"স্বামীর প্রতি টান যেমনি
ছেলেও জীবন পায় তেমনি ৷”
👍
আবেগ ভরে বলতে লাগলেন কমলাদেবী তখন তো বুঝিনি, বুঝবার বয়সও হয়নি ৷ যদি জানতাম, তাহলে তিন মাস কেন, তিন বছর বাড়ীতে না এলেও স্বামীকে অন্ততঃ ঘৃণা করতাম না; ক্ষুব্ধ হয়ে অশ্রদ্ধা করতাম না। স্বামীর অন্যায় বা অবিচারও যদি একটা বছর সয়ে-বয়ে নিতাম-তাহলে আজ এই অসহ্য জ্বালা সইতে হতো না। ওনার মুখের দিকে তাকাতে পারি না। যখন দেখি ছেলের দুর্ব্যবহার উনি নীরবে মাথা গুঁজে বসে আছেন, তখন কান্নায় বুক ভেঙ্গে আসে। এ আমি কি ভুল করলাম জীবনে। আচল দিয়ে মুখ ঢেকে ফুঁপিয়ে কাদতে লাগলেন কমলাদেবী৷
👍
সান্ত্বনা দিয়ে বললাম,--দুঃখ করবেন না মা। যা হবার তা তো হয়েই গেছে। এখন চেষ্টা করতে হবে, যাতে ছেলের মন থেকে বাবার প্ৰতি এই অশ্রদ্ধার ভাব মুছে ফেলা যায়।
👍
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাই তো তাদের সন্তানের জীবনের বুনিয়াদকে মজবুত ক 'রে তোলে।
👍
কিন্ত স্বামী ও স্ত্রী যদি প্রায় সমবয়সী হয়, অথবা অর্থ-সস্পদ, সম্মানে যদি পরস্পর পরস্পরের প্ৰতিদ্বন্দী হয়, অথবা স্ত্রীর মনে ‘সুপিরিয়র কমপ্লেক্সের [ Superiority Complex ] আবির্ভাব ঘটে, তাহলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শ্রদ্ধা জমাট বাঁধতে পারে না। এবং ঐ স্ত্রী স্বভাবতঃই আচারে, ব্যবহারে, স্বামীর অনুগত হয়ে নিজেকে স্বামীর কাছে নৈবেদ্যের মত নিবেদন করতে পারে না। “আমিই বা তেমাের থেকে কম কিসে?” এই মনোভাব থাকলে শ্রী কখনই স্বামীকে মহান্ ভাবের দ্বারা ঊদ্দীপ্ত করে তুলতে পারে না৷ আর মহান্ ভাবের দ্বারা যদি স্বামীকে উদ্দীপ্তই না করা যায়, তবে মহানুভব সন্তানের মা হওয়া কি সম্ভব ? সে অবস্থায় স্বামীতে অভিগমন অভিশাপ রূপেই দেখা দেয়।
●●●●●●●●
★★★★★★
কমলা দেবীর সন্তান এহেন হবার কারণ কি?
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের আদর্শে তার পর্য্যালোচনা
★★★★★★
“রতিকালে মায়ের ভাবভূমি, চিন্তা ও চেতনা যেমনতর থাকে, তেমনতর বিশিষ্টতা সম্পন্ন সন্তান আবির্ভূত হয়।”
👍
অভিগমনের রীতি:- রতিকালে মনের ভাবভূমি, চিন্তা ও চেতনা ভুঁইফোঁড়ের মত মিলন মুহূর্তে গজিয়ে ওঠে না। দৈনন্দিন জীবনে স্ত্রী তার অনুরাগমুখর চিন্তা, কর্ম্ম, সেবা ও ঐকান্তিকতা নিয়ে স্বামীতে যতখানি রত থাকে--তারই উপরে নির্ভর করছে রতিকালে উভয়ের, বিশেষ করে স্ত্রীর ভাবভূমি, চিন্তা ও চেতনা। তাই সুস্থ্য সুন্দর ও মনের মত সন্তানের জননী হতে হলে দাম্পত্য জীবনের দৈনন্দিন ব্যবহার মধুর ও মালিন্যহীন হতেই হবে। তাই ঋষির কণ্ঠে ধ্বনিত হল--
👍
"স্বামীর প্রতি টান যেমনি
ছেলেও জীবন পায় তেমনি ৷”
👍
পক্ষান্তরে, দৈনন্দিন জীবনে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক যদি প্রীতিমুখর না থাকে, বরং পরস্পরের প্রতি সন্দেহ, ঘৃণা, অনুযোগ, অভিযোগ, অভিমান বা রেদনা-বিধুর মনোভাব থাকে, তবে স্বামীতে অভিগমন না করইি শ্রেয়। কারণ, স্ত্রীর মন যদি ক্ষুব্ধ থাকে, তার অন্তরে স্বামীর প্রতি বিরূপতা ও বেদনার সুর ঝঙ্কৃত হতে থাকে, তবে ঐ স্ত্রী কােনমতেই স্বামীকে শ্রদ্ধা, ভক্তি ও শ্রেয় সন্দীপনায় অভিদীপ্ত করে তুলতে পারবে না। ফলে শ্রেষ্ঠ বা শুভসম্বেগী সন্তানের মা হওয়া সম্ভব হবে না। উপরন্তু, রতিকালে মিলন মুহূর্তে ব্যবহারিক জীবনের অশান্তি ও অসস্তোষের রেশমাত্র যদি স্ত্রীর মনে উঁকি মারে এবং তার ফলে স্ত্রীর মনে যদি মুহূর্তের জন্যও বিকার ঘটে, তবে ঐ মিলন-জাত সন্তান মানসিক বিকৃতি নিয়ে যে জন্মাবেই, তাতে কোন সন্দেহ নেই ৷ এমনকি স্বামীর প্রতি বিরূপ মনোভাব প্রকাশ করতে স্ত্রীর যে অঙ্গ বিকৃতি ঘটে থাকে, প্রায় ক্ষেত্রেই সন্তান সেই অঙ্গে বিকৃতি নিয়ে জন্মে থাকে ৷
👍
প্রজনন বিজ্ঞানে যাঁর ভূয়ােদর্শন ভবিষ্যতের বিজ্ঞানীদের জয়যাত্রার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছে সেই মহাজীবনের কণ্ঠে ঘোষিত হল-
👍
“অনূরাগী আবেগ-টানে
পেতে গিয়ে স্বামীর প্রীতি,
পাওয়ার পাথের বাধার তােড়ে
ঘটলে মনের কু-বিকৃতি;
যেমন ভাবে যে অঙ্গেতে
নারীর যেমন বিকার ফলে,
সস্তানেরও সে-অঙ্গটি
বিকৃতি পায় তেমনি হলে।
👍
প্রকৃতি এখানে যেন পক্ষপাতিত্ব কারেছেন ৷ গোটা দায়িত্বটা চাপিয়ে দিয়েছেন স্ত্রীর ওপরে। তাই স্ত্রীকে যদি সুস্থ সন্তানের মা হতে হয় তবে স্বামী যেমনই হোক না কেন বা যতই অন্যায় ব্যবহার করুক না কেন, তাঁকে সয়ে-বয়ে মমতার রসে সিক্ত ক'রে নিতেই হবে। প্রেম-প্রীতির সক্রিয় অভিব্যক্তিতে সেবামুখর আপ্যায়নে স্বামীকে মমতামুগ্ধ করে তুলতেই হবে। তা না পারলে ঐ নারীর-সন্তান ধারণ থেকে দূরে থাকা বাঞ্ছনীয়৷ কারণ স্বামীর প্রতি ক্ষোভ, দুঃখ, অপমান বা অনাদরে, তাকে মন থেকে দূরে সরিয়ে রেখে স্ত্রী যদি শুধু দৈহিক সান্নিধ্যে স্বামীকে টেনে নেয় বা আসতে দেয়-তবে মনের মত সন্তান পাবার আকাঙ্ক্ষা মনেই রয়ে যাবে। বাস্তবে যা পাবে তা অবাঞ্ছিত ব্যবহারে স্ত্রী ও স্বামী উভয়ের মনকেই বিষিয়ে তুলবে।

শ্রীশ্রী ঠাকুরের কাছে যখন বিভিন্ন দেশবরেণ্য নেতারা যেমন নেতাজী সুভাষ বসু, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, মহাত্মা গান্ধী প্রমুখ এসেছেন এবং প্রশ্ন করেছেন দেশের উন্নয়ন কোথা থেকে শুরু করলে ভালো হয়? ঠাকুর তাদেরকে এক কথায় বলেছিলেন , আগে সুবিবাহ ও সুপ্রজননের উপর জোর দিতে হবে। তাতে দেশের সর্বাধিক মঙ্গল হবে। সুসন্তান যদি না আসে তাহলে সমাজের উপকার কি করে হবে। আপনি কার উন্নয়ন করবেন? কিভাবে উন্নয়ন করবেন প্রকৃত মানুষ ছাড়া?

ফুটো কলসিতে আপনি যতই জল ঢালুন তাতে কিছুই থাকবে না। আস্তে আস্তে সব জল বের হয়ে যাবে। তেমনি ভাঙা মানুষ দিয়ে কি করে আপনি মজবুত সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখবেন? ভাঙা নৌকা নিয়ে আপনি যদি সাগর পাড়ি দেওয়ার চিন্তা করেন তা কখনোই সফল হবে না। ওটা একটা অবাস্তব স্বপ্ন। আমাদের সারা বিশ্বে আজ এই অবস্থা। সব জায়গায় ভালো মানুষের , যোগ্য মানুষের খুব অভাব। তাই বিভিন্ন সমস্যায় আমরা হাবুডুবু খাচ্ছি। মহাপরিপূরণকারী যুগপুরুষোত্তমম আমাদের সঠিক পথ দেখিয়ে দিয়েছেন। আমাদেরকে সমস্যা সমাধানের জন্য কি করতে হবে তা বলে দিয়ে গেছেন।তা আমরা যত তাড়াতাড়ি উপলব্দি করবো তত আমাদের মঙ্গল। তত তাড়াতাড়ি আমরা বিপদ থেকে ত্রাণ পাব। আর যদি অবহেলা করে দেরী করি ততই আমরা বিপদের অতলে ডুবে যাব।
একটি সুসন্তান দেশের জন্য কত উপকার করতে পারেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সেই রকম সন্তান কি করে পৃথিবীতে আনয়ন করা যায় তার ব্যবস্থা করতে হবে। বড় বড় অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, বৈশ্বিক সমস্যার সাথে এটাকেও গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা ও গবেষণা করতে হবে।
সম্রাট নেপোলিয়নের কথা আমরা বলতে পারি । যিনি বলেছিলেন,
"আমাকে একটি ভালো মা দাও, আমি তোমাকে একটি ভালো জাতি দিব।"
eugenics," meaning "well born,"
Eugenics (/jˈɛnɪks/; from Greek εὐ- "good" and γενής "come into being, growing")[2][3] is a set of beliefs and practices that aim to improve the genetic quality of a human population,[4][5] typically by excluding people and groups judged to be inferior and promoting those judged to be superior.[6]
The concept predates the term; Plato suggested applying the principles of selective breeding to humans around 400 BC. Early advocates of eugenics in the 19th century regarded it as a way of improving groups of people. In contemporary usage, the term eugenics is closely associated with scientific racism and white supremacism.[3] Modern bioethicists who advocate new eugenics characterise it as a way of enhancing individual traits, regardless of group membership.
While eugenic principles have been practiced as early as ancient Greece, the contemporary history of eugenics began in the early 20th century, when a popular eugenics movement emerged in the United Kingdom,[7] and then spread to many countries, including the United States, Canada,[8] and most European countries. In this period, people from across the political spectrum espoused eugenic ideas. Consequently, many countries adopted eugenic policies, intended to improve the quality of their populations' genetic stock. Such programs included both positive measures, such as encouraging individuals deemed particularly "fit" to reproduce, and negative measures, such as marriage prohibitions and forced sterilization of people deemed unfit for reproduction. Those deemed "unfit to reproduce" often included people with mental or physical disabilities, people who scored in the low ranges on different IQ tests, criminals and "deviants," and members of disfavored minority groups.
The eugenics movement became associated with Nazi Germany and the Holocaust when the defense of many of the defendants at the Nuremberg trials of 1945 to 1946 attempted to justify their human-rights abuses by claiming there was little difference between the Nazi eugenics programs and the U.S. eugenics programs.[9] In the decades following World War II, with more emphasis on human rights, many countries began to abandon eugenics policies, although some Western countries (the United States, Canada, and Sweden among them) continued to carry out forced sterilizations.

 ◆◆◆◆◆◆
তথ্য সূত্র:- মেয়েই তো মা।
লেখক: ডঃ রেবতী মোহন বিশ্বাস