বরণে বিচার 
   বরণ করিতে হইলেই দেখিও- 
         স্বামীর আদর্শ কি বা কেমন,
   তাঁহার আরাধনায় 
                চেষ্টা ও কর্মের আগুনে 
     তোমাকে আহুতি দিয়া সার্থক হওয়ার 
      প্রলোভন 
       তোমাকে প্রলুব্ধ করে কিনা; 
   আর, তুমি যাহাকে বরণ করতে চাও,
    সে 
     তাঁহাতে কেমনতর কতখানি-
   কারণ, তুমি তাঁহার সহধর্মিনী হইতে যাইতেছ;
           ইহাতে যদি তুমি উদ্বুদ্ধ হও,  
       আর, জাতি, বর্ণ, বংশ ও বিদ্যায়-
     যদি তোমার বরণীয় যিনি-
     তিনি সর্বতোভাবে 
       তোমা হতে শ্রেষ্ঠ হন-  
  এবং তোমার পূর্বপুরুষের অর্ঘনীয় বলিয়া 
       বিবেচনা কর -
     তবে- তাঁহাকে বরণ করিলে
                বিপত্তির হাত হইতে 
      এড়াইতে পারিবে- 
                        এটা ঠিক জানিও।
স্বামী
যদি তুমি তোমার পুরূষকে
    তোমার অস্তিত্বের মত
       অনুভব করিতে পার,
আর, তাহা করিলে-
বস্তুত: তোমার চরিত্রের ভিতর-দিয়া
 চাল-চলন, ভাব-ভাষা ইত্যাদির অভিব্যক্তি
        যদি ঘোষণা করে-
          সে তোমার অস্তিত্ব-
জানিও "স্বামী-সম্বোধন"
           তখনই 
     তোমার জয়যুক্ত হইবে।।
নারীর নীতি, বাণী-১৭৪, পৃষ্ঠা-১৭৪।  
সতীত্ব
যিনি স্বামীর  জীবন, যশ ও বৃদ্ধিকে
   উন্নতির পথে উচ্ছল করিয়া-
সম্বর্দ্ধনা, সহানুভূতি  , পারিপার্শ্বিকে প্রতিষ্ঠা,
    সেবা, শুশ্রুষা, সাহায্য ও সামর্থ্যে
           অবিচলিত রাখিয়া,
নিজের জীবন,যশ ও বৃদ্ধিকে অটুট করিয়া,-
ব্যষ্টি ও সমষ্টিতে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন-
        সতীত্ব তাঁহাতেই স্বার্থক,-
যদি নারীজন্মই লাভ করিয়াছ,
   সতীত্বকে আলিঙ্গন করিয়া
           সার্থক হও,
              জীব ও জগৎকে
                   সার্থক করিয়া তোল।
নারীর নীতি,বাণী ১৭৩,পৃষ্ঠা-২৫৯।  
প্রজননে-নারী ও পুরুষের বৈশিষ্ট্য
ধাতু বা temperament হইতেছে
   বৈধানিক বৈশিষ্ট্য
( Characteristic of the system) 
যাহা অনেকখানি-
      মানুষের বোধ,চিন্তা, চরিত্র
          ও চলনকে নিয়ন্ত্রিত করে;
তাই, পুরুষের বৈশিষ্ট্য
                জীবনকে উপ্ত করা-
    নারী সেখানে ধারন করিয়া মূর্ত্ত করে
             ও বৃদ্ধিতে নিয়োগ করে,-
আর, এটা সাধারণতঃ
         এককালীন একককে;-
পুরুষ এই সময়ে বহুতে উপ্ত করিতে পারে,
                        তাই
নারীর বৈশিষ্ট্য একগামিনী হওয়া-
     আর, ইহা তাহার
সুস্থ মনের সম্পদ,-
পুরুষ কিন্তু স্বভাবতই
       বহুগমন-প্রবণতা লইয়া
           জীবনধারন করে;-
তাই-
তোমার স্বামী
আদর্শে, চরিত্রে, জ্ঞানে ও সেবায়
            উচ্ছল থাকিয়াও-
বহুভার্য্যাপরায়ন হন,
আর, তাহা যদি তোমার স্বামীর পক্ষে 
             অমঙ্গলপ্রদ না হয়,
    দুঃখিত হইও না,
ঈর্ষ্যান্বিত হইও না-
বরং 
ভালবাস, যত্ন লও-
দেখিবে-তোমাতে তোমার স্বামী
আরও তুমি-প্রবল হইয়া উঠিয়াছেন
      -চিন্তা করিও না।
নারীর নীতি,বাণী-১৫৬।  
অভিগমনে শ্রদ্ধা ও সজ্জা
স্বামীর নিকট সুসজ্জিত হইয়া,
       সু-ভাব ও চিন্তা-পরায়ণ হইয়া,
শ্রদ্ধা ও অভিনিবেশ-সহকারে
তাঁহার অভিগমন করাই রীতিই
      বলিয়া দেয়
স্বামী কেমনভাবে উদ্দীপ্ত
ও তোমাতে আনত হইলে
       সুসন্তান-লাভ ঘটিয়া থাকে,-
আর, ইহা সুপ্রজননের একটি ধারা।
নারীর নীতি,বাণী-১৪৯,পৃষ্ঠা-২২২। 
সুসন্তান জননে
তোমার নিষ্ঠা, অনুরক্তি, ভাব ও ভক্তিতে
    অনুরঞ্জিত হইয়া
          তোমার স্বামীকে 
              সৎ ও সুস্থভাবে উদ্দীপ্ত করিয়া
              যখনই তোমাতে আনত করাইবে,-
সেই হইতেছে প্রকৃষ্ট লক্ষণ
        যে তুমি
    সৎ,সুস্থ ও দীপ্তিমান সন্তানের  
                                 জননী হইবে-
                                   সন্দেহ নাই,-
শাস্ত্রে সুসন্তানলাভার্থ 
     যাগ, যজ্ঞ, ক্রিয়া-কর্ম্মাদির
                    উদ্দেশ্যও এই।
নারীর নীতি,বাণী-১৪৮, পৃষ্ঠা-২২১। 
নারী-জননে ও সেবায়
তোমার স্বামী যেমনই হউন না কেন,-
   যদি তাঁহার উচ্চ-বংশানুক্রমিকতা থাকে-
         তুমি তাঁহাকে যেমনভাবে
                উদ্দীপ্ত ও আনত করিয়া তুলিবে,
ঠিক জেনো-
  অবিকল তাহাই-
              সন্তানরূপে পাইবে;
আর, ইহাও ঠিক,
      তোমার স্বামী-স্ত্রীর
         ভাব ,বাক্য, ও আচার-ব্যবহার
          ভূমিষ্ঠ সন্তানের
   শিক্ষা ও চরিত্রের মূলভিত্তি।
নারীর নীতি, বাণী-১৪৬,পৃষ্ঠা-২১৯।
বর-মনোনয়নে উপযুক্ততা
নারী যখন গর্ভধারণক্ষম হয়,
তখনই প্রকৃতি তাহাকে
     পুরুষ-মনোনয়নের ক্ষমতায়
              অধিরূঢ় করিয়া তোলে;-
আর,
নারী যদি বরকে স্বেচ্ছামত
      মনোনয়ন করিতে চায়-
         তখনই কেবল তাহা পারে সে;
নতুবা
         পিতামাতা সর্ব্বতোভাবে শ্রেষ্ঠ দেখিয়া
          যাহাকে বরণ করিবেন
              তাহাদের কন্যার জন্য-
তিনিই কন্যার বর বলিয়া
পরিগনিত হইবেন-
       ইহাই শাস্ত্রের নীতি।
নারীর নীতি, বাণী-১৪০,পৃষ্ঠা ২১২। 
অমনোনীত হীনপাত্রস্থতায়
রজস্বঃলা কন্যার অমতে
        বা অমনোনয়নে , কিংবা বলবাধ্য করিয়া
           যদি তাহাকে হীনপাত্রস্থ করা হয়-
              তাহা  অন্যায় ও অধর্ম,-
তাই, শাস্ত্রে আছে
      "দত্তামপি হরেৎ কন্যাং
          শ্রেয়াংশ্চেদ বর আব্রজেৎ।"
তুমি যদি নিজে কোন পুরুষকে বাগদান 
          বা বরণ করিয়া না থাক-
বা বরণ-ব্যাপারে তোমার অভিমত
        না-ই থাকিয়া থাকে-
এমতাবস্থায়-
      তোমার পিতামাতা কিংবা
             গুরুজনদিগকে
                বলিও
                  বুঝাইও-
                      নিবৃত্ত হইও।
নারীর নীতি, বাণী-১৪১,পৃষ্ঠা-২১৩-২১৪।
বাগদানে
 যদি কেহ
            নিজের অবস্থা বুঝিয়া,
                অন্যতে নিঃসংশয় হইয়া
কোন-কিছুর জন্য বাগদান করে-
তাহাকেই
       যে বিষয়ের জন্য বাক্যদান করিয়াছে-
তদ্বিষয়ে বাগদত্ত বা বাগদত্তা
                           বলিয়া অভিহিত করা যায়;-
তুমি যদি তোমার অবস্থা ও সামর্থ্য বুঝিয়া
               কোন পুরুষের সর্ব্ববিষয়ে নিঃসংশয় হইয়া
                    তোমাকে দান করিবার জন্য
                       বাক্যদান করিয়া থাক-
           তাহা হইলে তুমি বাকদত্তা  হইলে;
এই দানই তোমার প্রকৃত বিবাহ,
         যাহাকে দান করিলে
           তিনি গ্রহণ করুন
              বা না করুন;
আর, যদি তিনি গ্রহন নাই করেন,
     তাহা হইলেও
       অন্যকে পুনরায় বাগদান করিতে পার না;
          আর ইহা করিলে
            ধর্ম্মের দিক দিয়া
               তুমি পতিতা হইবে-
তাই,
     সর্ব্ববিষয়ে নিঃসংশয় না হইয়া
               কোন পুরুষে
                    তুমি বাগদান করিও না;-
আর, যদি করিয়াই থাক-
যদি পার,-ফিরিও না-
      ফিরিলে দুর্ব্বলতাকে অবলম্বন করিয়া
                         পাতক
আজীবন
তোমার পিছু লইতে পারে-
        হিসাব করিয়া চলিও।
নারীর নীতি,বাণী-১৩৯,পৃষ্ঠা-২১১। 
সুপ্রজননে নিষ্ঠা
ক্ষীণমতির
কোন-কিছুতে লাগোয়া থাকা
         অত্যন্ত কষ্টকর বলিয়া মনে হয়;-
আর, এই লাগোয়া থাকা অভ্যাসকে
          যতই তাচ্ছিল্য করা যায়,
মন ততই 
দুর্ব্বল,চঞ্চল,ক্ষীণতর-চিন্তাসম্পন্ন হয়-
তাই-
     তাহার মানসিক অস্থিরতা
         জীবনকে প্রায় অবহনীয়
           করিয়া তোলে;
আবার,
এইরূপ অস্তির ও  ক্ষীণমনা স্ত্রী
     তাঁহার স্বামীকে তাহার  ভাবধারায়
        এমনতরভাবে উদ্বুদ্ধ করিতে পারে না-
            যাহাতে তাঁহার মস্তিষ্ক
                ভাবের আবেগে
স্ফীত ও উৎফুল্ল হইয়া 
         নিবিড়ভাবে আলিঙ্গন করে;
এবং তাহারই ফলে
    সে এমনতর সন্তানের গর্ভধারিনী হয়-
যাহার ক্ষীণ ও চঞ্চল মন ধাতুগত হইয়া থাকে,-
  পরে তাহা অতি দুষ্কর হইয়া থাকে,
আর,
      অল্পায়ু,বেকুব ও রোগসঙ্কুল সন্ততির
             ইহাও একটি প্রধান কারন;
তুমি যদি
          অমনতর হইয়া থাক,
             লাগোয়া  থাকা বা নিষ্ঠাকে
                     যত্নে
              চরিত্রগত করিতে চেষ্টা কর;
 যদি পার-
এ দুর্দ্দৈবের হাত হইতে
    এড়াইতে,-
ভাবিও না।
নারীর নীতি, বাণী-৯৮,পৃষ্ঠা-১৪৯-১৫০,।
বিবাহে বয়সের পার্থক্য
যাহাকে পতিবরণ করার
            সম্ভাবনা আছে
তাঁহাকে
      শুধু বন্ধুর মতন চিন্তা করিও না,
বরং ভাবিও-
         দেবতার মত
           আচার্য্যের মত;
    ভাব ও বয়সের নৈকট্য
          মানুষের
          বোধ ও গ্রহণক্ষমতার
           দুরত্ব ঘটাইয়া থাকে;-
তাই-
স্বামী-স্ত্রী বয়সের পার্থক্য
    পুরুষের যে-বয়সে
প্রথম সন্তান হইতে পারে
      ততখানি 
        হওয়াই উচিত।
নারীর নীতি,বাণী-৮২,পৃষ্ঠা-১২৪-১২৫।
প্রজনন নিয়ন্ত্রনে- নারীর ভাব ও দায়িত্ব 
বিবাহের অনেকগুলির মধ্যে
       একটা প্রধান প্রয়োজন
              সুপ্রজনন,
আর,
      এই সুপ্রজননকে নিয়ন্ত্রন করে
           নারীর ভাব-
যাহা পুরুষকে উদ্দীপ্ত করিয়া
           আনত করে;
      তবেই
               নারী যাহাকে
              বহন করিয়া, ধারন করিয়া
              কৃতার্থ ও সার্থক হইবে,-
বিবেচনা করিয়া
      তেমনতর সর্ব্ববিষয়ে শ্রেষ্ঠ
        পুরুষের সহিতই
          পরিণীত হওয়াই উচিত;
অতএব
         বিবাহে পুরুষকে বরণ করার ভার
         নারীতে থাকাই সমীচীন বলিয়া
                      মনে হয়,-
           তাহা নয় কি?
তুমিই বিবেচনা করিয়া ও গুরুজনের সহিত
                           আলোচনা করিয়া
তোমার বরকে বরণ করিও। 
নারীর নীতি, বাণী-৮১, পৃষ্ঠা-১২২-১২৩।
বিবাহে -অনুলোম ও প্রতিলোম 
অনুলোম যেমন 
                 উন্নতকে প্রসব করে,
                  প্রতিলোম তেমনিই
               অবনতিকে বৃদ্ধি করে,-
তাই
      প্রতিলোম বিবাহ 
           এমনতর পাপ-
যাহা
      নিজের বংশকে 
          ধ্বংসে অবসান তো করেই,-
তাহা ছাড়া
            পারিপার্শ্বিক বা সমাজকেও 
                 ঘাড় ধরিয়া
                   বিধ্বস্তির দিকে
                      চালিত করে,-
অসতী স্ত্রীর নিষ্কৃতি 
          বরং সম্ভব 
            কিন্তু প্রতিলোমজ হীনত্বের 
                            অপলাপ
                              অত্যন্তই দুষ্কর। 
নারীর নীতি, বাণী-৮০, পৃষ্ঠা- ১২০-১২১।
বরণ-সেবা ও স্তুতির আকুতিতে বিবাহ
যদি কোন পুরুষের
           আদর্শপ্রাণতা ও সর্ব্বপ্রকারে শ্রেষ্ঠত্ব 
              তোমাকে শ্রদ্ধাভক্তিতে
               অবনত ও নতজানু করিয়া
         তাঁহার সেবায়
           কৃতার্থ করিতে চায়-
         অন্তর হইতে মুখে
           যাহার স্তুতিগান
              উপচিয়া উঠে,
          তাঁহাকে তুমি বরণ করিতে পার-
              আত্মদান করিতে পার,
           তাঁহার স্ত্রীত্ব লাভ করিয়া 
             স্তুতি ও সেবায়
               ধন্য হইবে-
               সন্দেহ নাই। 
নারীর নীতি,বাণী-৭৯, পৃষ্ঠা-১১৯। 
বরেণ্যে -বরণ
পুরুষ-যিনি সর্ব্বপ্রকারেই
          তোমা হইতে শ্রেষ্ঠ-
ও তোমাতে
           তোমার যে-পূর্ব্বপুরুষগণ অধিষ্ঠিত
                  তাহাদের বরেণ্য,-
      যাঁহার সহিত
    আদর্শে আহুতি হইবার প্রলোভন
                তোমাকে-
সহ্য ও বহন করিবার উন্মাদনায়
           উদ্দাম করিয়া তুলিয়াছে-
                 তুমি
           তাঁহারই বধু হও-
           সার্থক হইবে। 
নারীর নীতি,বাণী-৭৭,পৃষ্ঠা-১১৭।
  
 বিবাহে বহন-ক্ষমতা
প্রকৃষ্টরূপে বহন করাকেই
                    বিবাহ বলে,
যে বহন করিবে
(আর এ-বহন যত প্রকারে হইতে পারে)
সে যদি-
     যাহাকে বহন করিতে হইবে
            তাহা হইতে
      সর্ব্বপ্রকারে-সর্ব্ববিষয়ে
           সমর্থ না হয়-
             তবে কি-করিয়া হইতে পারে?
যাঁহাকে তুমি-তোমাকে সর্ব্বপ্রকারে
           বহন করিবার জন্য
               প্রার্থনা করিতেছ,
      তিনি তোমার-সে প্রার্থনা
পূরণ করিবার
       উপযুক্ত কিনা,
          বিবেচনা করিয়া
               নিজেকে দান করিও,-
                   পতন, বেদনা ও আঘাত হইতে
                          ঊত্তীর্ণ হইবে।।  
নারীর নীতি,বাণী-৭৬,পৃষ্ঠা-১১৫-১১৬।
বরণের শ্রেষ্ঠ ক্ষেত্র
এই বর্ণ ও বংশানুক্রমিতার 
         ভিত্তির উপর-
          বোধ, বিদ্যা, চরিত্র ও ব্যবহার
               যেখানে
                 পুষ্ট ও পবিত্র,-
         সেই হইল তোমার
               বরণ করিবার শ্রেষ্ঠ ক্ষেত্র,-
        মনে রাখিও-
              তোমার ভালোবাসা
                  যেখানে-যেমনভাবে
                    ন্যস্ত হইবে-
    ফলের উদ্ভবও
          তেমনতর হইবে
            সন্দেহ নাই-
                বুঝিয়া চলিও।
নারীর নীতি, বাণী-৭৪,পৃষ্ঠা-১১-১১২।
বরণে -বিচার 
বরণ করিতে হইলেই দেখিও-
                স্বামীর আদর্শ কী বা কেমন,
তাঁহার আরাধনায়
                চেষ্টা ও কর্ম্মের আগুনে
            তোমাকে আহুতি দিয়া সার্থক হওয়ার
                     প্রলোভন
                      তোমাকে প্রলুব্দ করে কিনা;
আর, তুমি যাহাকে বরণ করিতে চাও,
     সে
        তাঁহাতে কেমনতর ও কতখানি-
কারন, তুমি তাহার সহধর্ম্মিণী হইতে যাইতেছ;
          ইহাতে যদি তুমি উদ্বুদ্ধ হও-
                আর, জাতি,বর্ণ, বংশ, বিদ্যায়-
                     যদি-তোমার বরণীয় যিনি-
        তিনি সর্ব্বতোভাবে
                তোমা হতে শ্রেষ্ঠ হ'ন-
এবং তোমার পূর্ব্বপুরুষের অর্ঘনীয় বলিয়া
                      বিবেচনা কর,-
      তবে-তাঁহাকে বরণ করিলে
          বিপত্তির হাত হইতে
              এড়াইতে পারিবে-
                 এটা ঠিক জানিও। 
নারীর নীতি,বাণী-৭৩,পৃষ্ঠা-১০৯-১১০।  
বিবাহে উদ্ধর্দ্ধন ও সুপ্রজনন 
বিবাহে
      মানুষের
           প্রধান দুইটি কামনাকেই
               পরিপূরণ করে;-
    তার একটি
          উদ্ধর্দ্ধন,
               অন্যটি সুপ্রজনন;-
         অনুপযুক্ত বিবাহে
              এই দুটিকেই
                     খিন্ন করিয়া তোলে;
               সাবধান!
                         বিবাহকে খেলনা ভাবিও না-
             যাহাতে
                  তোমার জীবন
                           ও
                      জনন
                             জড়িত।
নারীর নীতি,বাণী-৭২, পৃষ্ঠা-১০৭-১০৮। 
 কল্পনাপ্রহেলিকায় স্বামী-বরণ 
 যে-মেয়েরা
            স্বামীকে
               তাহাদের কল্পনার মত করিয়া
               পাইতে চায়,-
      বাস্তবে উদ্বুদ্ধ হইয়া
            স্বামীকে বরণ করে না,-
তাহারা
        স্বামীর সহিত
                যতই পরিচিত হয়,
                      ততই
                        নিরাশ হয়;-
আপসোস, দোষদৃষ্টি, জীবনে ধিক্কার ইত্যাদি
       তাহাদের
           পার্শ্বানুচর হইয়া
                 অবসাদে অবসান হয়,-
    আর, সেই হতভাগ্য পুরুষেরও
              শেষ নিঃশ্বাস
                      আমনি-করিয়াই
                         মরণে বিলীন হইয়া যায়;
             ভুল করিও না,
                  অমনতর মরণকে
                       আমন্ত্রন করিও না।
নারীর নীতি, বাণী-৭০, পৃষ্ঠা-১০৩-১০৪।
বরণে বংশানুক্রমিতা 
পুরুষ আদর্শানুরাগ
              শ্রদ্ধা ও ভক্তি হইতে উৎপন্ন,-
   যাঁহা হইতে প্রেরণা পাইয়া,
                  কর্ম্মানুষ্ঠান করিয়া,
                     সেবা করিয়া-
   যে-বোধ ও জানার উৎপত্তি হয়,
 তাহা সন্তানের মূলগত ধাতুতে সংক্রামিত হইয়া
              যে-স্বভাবের সৃষ্টি হয়,
                        তাহাই তাহার
                             আদিম সংস্কার;
 তাহার এই সংস্কারই
                তাহার পারিপার্শ্বিক হইতে
                   বাঞ্চিত উপকরন সংগ্রহ করিয়া
                         বিবর্দ্ধিত হইয়া
                                  মানুষ হইয়া দাঁড়ায়;-
তবেই, মানুষের উন্নতির মূল উপদানই হইতেছে
         পুরুষপরম্পরাগত আদর্শানুরাগ হইতে উদ্ভূত
এই বংশানুক্রমিতা( cultural heredity);
  ইহা যেখানে শ্রেষ্ঠ-
             বরণ-ব্যাপারে তাহাই অগ্রগন্য ও আদরণীয়;
মনে রাখিও-
     এই বর্ণ ও বংশকে তাচ্ছিল্য করিলে 
      সবংশে যে তুমি মরণযাত্রী হইবে
          সে-সম্বন্ধে আর ভুল কোথায়?
নারীর নীতি, বাণী -৭১,পৃষ্ঠা-১০৫-১০৬। 
বরণে-শ্রেষ্ঠে নিকৃষ্টতায়
শ্রেষ্ঠে বংশানুক্রমতা (heredity)- সত্ত্বেও-
    এমন-কি বিদ্যা-ব্যবহারে শ্রেষ্ঠ থাকিয়াও 
      যদি কেহ হীন চিন্তা ও কর্ম্মানুষ্ঠানী হয়,
আর, তাহা কোন উচ্চ-আদর্শকে
      বহন ও প্রতিষ্ঠা না করিয়া
           স্বার্থকেই পরিপুষ্ট করে,-
এমনতর স্থলে
             শ্রেষ্ঠ হইলেও নিকৃষ্ট
                   বলিয়াই পরিগনিত হইবে-
তুমি
    বরণ-ব্যাপারে ইহা হইতে দূরে থাকিও,-
ইহাও
      শ্রেষ্ঠ বংশানুক্রমিতাকে
         অপঘাত করিয়া
            নিকৃষ্ঠকে নিমন্ত্রন করে।
নারীর নীতি, বাণী-১১৩,পৃষ্ঠা-১৭২।  
বর বরণে-অসংস্রব 
যদি  উপযুক্ত স্বামী লাভ করিতে চাও-
          পুরুষ হইতে দূরে থাকিও-
          কাহাকেও
                স্বামীভাবে
                  কল্পনা করিও না,-
কারন,
       ইহাতে
         মন
           কামলোলুপ হইয়া
              তোমার দৃষ্টিকে
                   অস্বচ্ছ করিয়া তুলিবে;
-কিন্তু যাঁহাকে স্বামী করিতে চাও
       তাঁহার ইষ্ট, আচার, বংশ, যশ, স্বাস্থ্য,
                    শ্রদ্ধা,জ্ঞান ইত্যাদি 
কাম্য, সহনীয় ও বহনীয় কিনা-
            অবলোকন করিও
  এবং
       মঙ্গালাকাঙ্ক্ষী গুরুজনের সহিত
             আলোচনা করিও
                        প্রাপ্তিতে ভ্রান্তি
                              কমই ঘটিবে ।
নারীর নীতি, বাণী-৬৬,পৃষ্ঠা-৯৬-৯৭। 
অনুলোমে পূন্য-প্রতিলোমে পাপ 
অনুলোম-
       জীবন ও বৃদ্ধিকে
                ক্রমোন্নয়নে অধিরূঢ় করে বলিয়া
                    তাহা ধর্ম ও পূণ্যের প্রসবিতা;
আর, প্রতিলোম-সংসর্গ
          জাতির বংশানুক্রমিক অর্জ্জিত অভিজ্ঞতা
                            ও
          ব্যক্তিত্বের অপঘাত ঘটাইয়া-
           হীনত্বে সংবর্দ্ধিত ও পরিচালিত করিয়া
            মূর্ত্ত করে বলিয়া-
                       তাহা
           অধর্ম্ম,হীনতা ও পাপেরই 
                                       জননী ।
নারীর নীতি, বাণী-১১৪,পৃষ্ঠা-১৭৩।  
       
 নারীতে পূর্ব্বপুরুষ
গর্ব্বের সহিত স্মরণ করিও-
            তোমাতে যে জীবন প্রবাহিত হইতেছে,
তাহা তোমারে
             পূর্ব্ব-পূর্ব্ব পুরুষদিগকে বহন করিয়া;-
যাঁহাকে অর্ঘ্য দিয়া
           তোমার পূর্ব্ব-পূর্ব্ব পুরুষ
               প্রীত ও ফুল্ল হ'ন মনে কর,-
যাঁহার বা যে-বংশের চরণস্পর্শে
               তাঁহারা ধন্য হ'ন মনে কর,-
তুমি
      নতজানু হইয়া 
             তাঁহারই চরণে অবনত হইও,-
             তাঁহাকেই বরণ করিও,-
                 'স্বামী'-সম্বোধন তাঁহাকেই করিও;-
আর, তোমার এই চিন্তা
ও সম্বোধনের ভিতর-দিয়া
    উৎফুল্লকন্ঠে তোমার পূর্ব্বপুরুষগনও 
            মঙ্গল বর্ষণ করিবেন;
নিন্দিত হইও না,
      তাঁহাদিগকে বেদনাপ্লুত করিও না,
          উদ্বুদ্ধ হও-উজ্জ্বল হও,-
বংশ ও জাতিকে উন্নত কর।
নারীর নীতি, বাণী-৬৯,পৃষ্ঠা-১০১-১০২।   
                      
৩) বৈবাহিক জীবনঃ