বরণে বিচার
বরণ করিতে হইলেই দেখিও-
স্বামীর আদর্শ কি বা কেমন,
তাঁহার আরাধনায়
চেষ্টা ও কর্মের আগুনে
তোমাকে আহুতি দিয়া সার্থক হওয়ার
প্রলোভন
তোমাকে প্রলুব্ধ করে কিনা;
আর, তুমি যাহাকে বরণ করতে চাও,
সে
তাঁহাতে কেমনতর কতখানি-
কারণ, তুমি তাঁহার সহধর্মিনী হইতে যাইতেছ;
ইহাতে যদি তুমি উদ্বুদ্ধ হও,
আর, জাতি, বর্ণ, বংশ ও বিদ্যায়-
যদি তোমার বরণীয় যিনি-
তিনি সর্বতোভাবে
তোমা হতে শ্রেষ্ঠ হন-
এবং তোমার পূর্বপুরুষের অর্ঘনীয় বলিয়া
বিবেচনা কর -
তবে- তাঁহাকে বরণ করিলে
বিপত্তির হাত হইতে
এড়াইতে পারিবে-
এটা ঠিক জানিও।
স্বামী
যদি তুমি তোমার পুরূষকে
তোমার অস্তিত্বের মত
অনুভব করিতে পার,
আর, তাহা করিলে-
বস্তুত: তোমার চরিত্রের ভিতর-দিয়া
চাল-চলন, ভাব-ভাষা ইত্যাদির অভিব্যক্তি
যদি ঘোষণা করে-
সে তোমার অস্তিত্ব-
জানিও "স্বামী-সম্বোধন"
তখনই
তোমার জয়যুক্ত হইবে।।
নারীর নীতি, বাণী-১৭৪, পৃষ্ঠা-১৭৪।
সতীত্ব
যিনি স্বামীর জীবন, যশ ও বৃদ্ধিকে
উন্নতির পথে উচ্ছল করিয়া-
সম্বর্দ্ধনা, সহানুভূতি , পারিপার্শ্বিকে প্রতিষ্ঠা,
সেবা, শুশ্রুষা, সাহায্য ও সামর্থ্যে
অবিচলিত রাখিয়া,
নিজের জীবন,যশ ও বৃদ্ধিকে অটুট করিয়া,-
ব্যষ্টি ও সমষ্টিতে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন-
সতীত্ব তাঁহাতেই স্বার্থক,-
যদি নারীজন্মই লাভ করিয়াছ,
সতীত্বকে আলিঙ্গন করিয়া
সার্থক হও,
জীব ও জগৎকে
সার্থক করিয়া তোল।
নারীর নীতি,বাণী ১৭৩,পৃষ্ঠা-২৫৯।
প্রজননে-নারী ও পুরুষের বৈশিষ্ট্য
ধাতু বা temperament হইতেছে
বৈধানিক বৈশিষ্ট্য
( Characteristic of the system)
যাহা অনেকখানি-
মানুষের বোধ,চিন্তা, চরিত্র
ও চলনকে নিয়ন্ত্রিত করে;
তাই, পুরুষের বৈশিষ্ট্য
জীবনকে উপ্ত করা-
নারী সেখানে ধারন করিয়া মূর্ত্ত করে
ও বৃদ্ধিতে নিয়োগ করে,-
আর, এটা সাধারণতঃ
এককালীন একককে;-
পুরুষ এই সময়ে বহুতে উপ্ত করিতে পারে,
তাই
নারীর বৈশিষ্ট্য একগামিনী হওয়া-
আর, ইহা তাহার
সুস্থ মনের সম্পদ,-
পুরুষ কিন্তু স্বভাবতই
বহুগমন-প্রবণতা লইয়া
জীবনধারন করে;-
তাই-
তোমার স্বামী
আদর্শে, চরিত্রে, জ্ঞানে ও সেবায়
উচ্ছল থাকিয়াও-
বহুভার্য্যাপরায়ন হন,
আর, তাহা যদি তোমার স্বামীর পক্ষে
অমঙ্গলপ্রদ না হয়,
দুঃখিত হইও না,
ঈর্ষ্যান্বিত হইও না-
বরং
ভালবাস, যত্ন লও-
দেখিবে-তোমাতে তোমার স্বামী
আরও তুমি-প্রবল হইয়া উঠিয়াছেন
-চিন্তা করিও না।
নারীর নীতি,বাণী-১৫৬।
অভিগমনে শ্রদ্ধা ও সজ্জা
স্বামীর নিকট সুসজ্জিত হইয়া,
সু-ভাব ও চিন্তা-পরায়ণ হইয়া,
শ্রদ্ধা ও অভিনিবেশ-সহকারে
তাঁহার অভিগমন করাই রীতিই
বলিয়া দেয়
স্বামী কেমনভাবে উদ্দীপ্ত
ও তোমাতে আনত হইলে
সুসন্তান-লাভ ঘটিয়া থাকে,-
আর, ইহা সুপ্রজননের একটি ধারা।
নারীর নীতি,বাণী-১৪৯,পৃষ্ঠা-২২২।
সুসন্তান জননে
তোমার নিষ্ঠা, অনুরক্তি, ভাব ও ভক্তিতে
অনুরঞ্জিত হইয়া
তোমার স্বামীকে
সৎ ও সুস্থভাবে উদ্দীপ্ত করিয়া
যখনই তোমাতে আনত করাইবে,-
সেই হইতেছে প্রকৃষ্ট লক্ষণ
যে তুমি
সৎ,সুস্থ ও দীপ্তিমান সন্তানের
জননী হইবে-
সন্দেহ নাই,-
শাস্ত্রে সুসন্তানলাভার্থ
যাগ, যজ্ঞ, ক্রিয়া-কর্ম্মাদির
উদ্দেশ্যও এই।
নারীর নীতি,বাণী-১৪৮, পৃষ্ঠা-২২১।
নারী-জননে ও সেবায়
তোমার স্বামী যেমনই হউন না কেন,-
যদি তাঁহার উচ্চ-বংশানুক্রমিকতা থাকে-
তুমি তাঁহাকে যেমনভাবে
উদ্দীপ্ত ও আনত করিয়া তুলিবে,
ঠিক জেনো-
অবিকল তাহাই-
সন্তানরূপে পাইবে;
আর, ইহাও ঠিক,
তোমার স্বামী-স্ত্রীর
ভাব ,বাক্য, ও আচার-ব্যবহার
ভূমিষ্ঠ সন্তানের
শিক্ষা ও চরিত্রের মূলভিত্তি।
নারীর নীতি, বাণী-১৪৬,পৃষ্ঠা-২১৯।
বর-মনোনয়নে উপযুক্ততা
নারী যখন গর্ভধারণক্ষম হয়,
তখনই প্রকৃতি তাহাকে
পুরুষ-মনোনয়নের ক্ষমতায়
অধিরূঢ় করিয়া তোলে;-
আর,
নারী যদি বরকে স্বেচ্ছামত
মনোনয়ন করিতে চায়-
তখনই কেবল তাহা পারে সে;
নতুবা
পিতামাতা সর্ব্বতোভাবে শ্রেষ্ঠ দেখিয়া
যাহাকে বরণ করিবেন
তাহাদের কন্যার জন্য-
তিনিই কন্যার বর বলিয়া
পরিগনিত হইবেন-
ইহাই শাস্ত্রের নীতি।
নারীর নীতি, বাণী-১৪০,পৃষ্ঠা ২১২।
অমনোনীত হীনপাত্রস্থতায়
রজস্বঃলা কন্যার অমতে
বা অমনোনয়নে , কিংবা বলবাধ্য করিয়া
যদি তাহাকে হীনপাত্রস্থ করা হয়-
তাহা অন্যায় ও অধর্ম,-
তাই, শাস্ত্রে আছে
"দত্তামপি হরেৎ কন্যাং
শ্রেয়াংশ্চেদ বর আব্রজেৎ।"
তুমি যদি নিজে কোন পুরুষকে বাগদান
বা বরণ করিয়া না থাক-
বা বরণ-ব্যাপারে তোমার অভিমত
না-ই থাকিয়া থাকে-
এমতাবস্থায়-
তোমার পিতামাতা কিংবা
গুরুজনদিগকে
বলিও
বুঝাইও-
নিবৃত্ত হইও।
নারীর নীতি, বাণী-১৪১,পৃষ্ঠা-২১৩-২১৪।
বাগদানে
যদি কেহ
নিজের অবস্থা বুঝিয়া,
অন্যতে নিঃসংশয় হইয়া
কোন-কিছুর জন্য বাগদান করে-
তাহাকেই
যে বিষয়ের জন্য বাক্যদান করিয়াছে-
তদ্বিষয়ে বাগদত্ত বা বাগদত্তা
বলিয়া অভিহিত করা যায়;-
তুমি যদি তোমার অবস্থা ও সামর্থ্য বুঝিয়া
কোন পুরুষের সর্ব্ববিষয়ে নিঃসংশয় হইয়া
তোমাকে দান করিবার জন্য
বাক্যদান করিয়া থাক-
তাহা হইলে তুমি বাকদত্তা হইলে;
এই দানই তোমার প্রকৃত বিবাহ,
যাহাকে দান করিলে
তিনি গ্রহণ করুন
বা না করুন;
আর, যদি তিনি গ্রহন নাই করেন,
তাহা হইলেও
অন্যকে পুনরায় বাগদান করিতে পার না;
আর ইহা করিলে
ধর্ম্মের দিক দিয়া
তুমি পতিতা হইবে-
তাই,
সর্ব্ববিষয়ে নিঃসংশয় না হইয়া
কোন পুরুষে
তুমি বাগদান করিও না;-
আর, যদি করিয়াই থাক-
যদি পার,-ফিরিও না-
ফিরিলে দুর্ব্বলতাকে অবলম্বন করিয়া
পাতক
আজীবন
তোমার পিছু লইতে পারে-
হিসাব করিয়া চলিও।
নারীর নীতি,বাণী-১৩৯,পৃষ্ঠা-২১১।
সুপ্রজননে নিষ্ঠা
ক্ষীণমতির
কোন-কিছুতে লাগোয়া থাকা
অত্যন্ত কষ্টকর বলিয়া মনে হয়;-
আর, এই লাগোয়া থাকা অভ্যাসকে
যতই তাচ্ছিল্য করা যায়,
মন ততই
দুর্ব্বল,চঞ্চল,ক্ষীণতর-চিন্তাসম্পন্ন হয়-
তাই-
তাহার মানসিক অস্থিরতা
জীবনকে প্রায় অবহনীয়
করিয়া তোলে;
আবার,
এইরূপ অস্তির ও ক্ষীণমনা স্ত্রী
তাঁহার স্বামীকে তাহার ভাবধারায়
এমনতরভাবে উদ্বুদ্ধ করিতে পারে না-
যাহাতে তাঁহার মস্তিষ্ক
ভাবের আবেগে
স্ফীত ও উৎফুল্ল হইয়া
নিবিড়ভাবে আলিঙ্গন করে;
এবং তাহারই ফলে
সে এমনতর সন্তানের গর্ভধারিনী হয়-
যাহার ক্ষীণ ও চঞ্চল মন ধাতুগত হইয়া থাকে,-
পরে তাহা অতি দুষ্কর হইয়া থাকে,
আর,
অল্পায়ু,বেকুব ও রোগসঙ্কুল সন্ততির
ইহাও একটি প্রধান কারন;
তুমি যদি
অমনতর হইয়া থাক,
লাগোয়া থাকা বা নিষ্ঠাকে
যত্নে
চরিত্রগত করিতে চেষ্টা কর;
যদি পার-
এ দুর্দ্দৈবের হাত হইতে
এড়াইতে,-
ভাবিও না।
নারীর নীতি, বাণী-৯৮,পৃষ্ঠা-১৪৯-১৫০,।
বিবাহে বয়সের পার্থক্য
যাহাকে পতিবরণ করার
সম্ভাবনা আছে
তাঁহাকে
শুধু বন্ধুর মতন চিন্তা করিও না,
বরং ভাবিও-
দেবতার মত
আচার্য্যের মত;
ভাব ও বয়সের নৈকট্য
মানুষের
বোধ ও গ্রহণক্ষমতার
দুরত্ব ঘটাইয়া থাকে;-
তাই-
স্বামী-স্ত্রী বয়সের পার্থক্য
পুরুষের যে-বয়সে
প্রথম সন্তান হইতে পারে
ততখানি
হওয়াই উচিত।
নারীর নীতি,বাণী-৮২,পৃষ্ঠা-১২৪-১২৫।
প্রজনন নিয়ন্ত্রনে- নারীর ভাব ও দায়িত্ব
বিবাহের অনেকগুলির মধ্যে
একটা প্রধান প্রয়োজন
সুপ্রজনন,
আর,
এই সুপ্রজননকে নিয়ন্ত্রন করে
নারীর ভাব-
যাহা পুরুষকে উদ্দীপ্ত করিয়া
আনত করে;
তবেই
নারী যাহাকে
বহন করিয়া, ধারন করিয়া
কৃতার্থ ও সার্থক হইবে,-
বিবেচনা করিয়া
তেমনতর সর্ব্ববিষয়ে শ্রেষ্ঠ
পুরুষের সহিতই
পরিণীত হওয়াই উচিত;
অতএব
বিবাহে পুরুষকে বরণ করার ভার
নারীতে থাকাই সমীচীন বলিয়া
মনে হয়,-
তাহা নয় কি?
তুমিই বিবেচনা করিয়া ও গুরুজনের সহিত
আলোচনা করিয়া
তোমার বরকে বরণ করিও।
নারীর নীতি, বাণী-৮১, পৃষ্ঠা-১২২-১২৩।
বিবাহে -অনুলোম ও প্রতিলোম
অনুলোম যেমন
উন্নতকে প্রসব করে,
প্রতিলোম তেমনিই
অবনতিকে বৃদ্ধি করে,-
তাই
প্রতিলোম বিবাহ
এমনতর পাপ-
যাহা
নিজের বংশকে
ধ্বংসে অবসান তো করেই,-
তাহা ছাড়া
পারিপার্শ্বিক বা সমাজকেও
ঘাড় ধরিয়া
বিধ্বস্তির দিকে
চালিত করে,-
অসতী স্ত্রীর নিষ্কৃতি
বরং সম্ভব
কিন্তু প্রতিলোমজ হীনত্বের
অপলাপ
অত্যন্তই দুষ্কর।
নারীর নীতি, বাণী-৮০, পৃষ্ঠা- ১২০-১২১।
বরণ-সেবা ও স্তুতির আকুতিতে বিবাহ
যদি কোন পুরুষের
আদর্শপ্রাণতা ও সর্ব্বপ্রকারে শ্রেষ্ঠত্ব
তোমাকে শ্রদ্ধাভক্তিতে
অবনত ও নতজানু করিয়া
তাঁহার সেবায়
কৃতার্থ করিতে চায়-
অন্তর হইতে মুখে
যাহার স্তুতিগান
উপচিয়া উঠে,
তাঁহাকে তুমি বরণ করিতে পার-
আত্মদান করিতে পার,
তাঁহার স্ত্রীত্ব লাভ করিয়া
স্তুতি ও সেবায়
ধন্য হইবে-
সন্দেহ নাই।
নারীর নীতি,বাণী-৭৯, পৃষ্ঠা-১১৯।
বরেণ্যে -বরণ
পুরুষ-যিনি সর্ব্বপ্রকারেই
তোমা হইতে শ্রেষ্ঠ-
ও তোমাতে
তোমার যে-পূর্ব্বপুরুষগণ অধিষ্ঠিত
তাহাদের বরেণ্য,-
যাঁহার সহিত
আদর্শে আহুতি হইবার প্রলোভন
তোমাকে-
সহ্য ও বহন করিবার উন্মাদনায়
উদ্দাম করিয়া তুলিয়াছে-
তুমি
তাঁহারই বধু হও-
সার্থক হইবে।
নারীর নীতি,বাণী-৭৭,পৃষ্ঠা-১১৭।
বিবাহে বহন-ক্ষমতা
প্রকৃষ্টরূপে বহন করাকেই
বিবাহ বলে,
যে বহন করিবে
(আর এ-বহন যত প্রকারে হইতে পারে)
সে যদি-
যাহাকে বহন করিতে হইবে
তাহা হইতে
সর্ব্বপ্রকারে-সর্ব্ববিষয়ে
সমর্থ না হয়-
তবে কি-করিয়া হইতে পারে?
যাঁহাকে তুমি-তোমাকে সর্ব্বপ্রকারে
বহন করিবার জন্য
প্রার্থনা করিতেছ,
তিনি তোমার-সে প্রার্থনা
পূরণ করিবার
উপযুক্ত কিনা,
বিবেচনা করিয়া
নিজেকে দান করিও,-
পতন, বেদনা ও আঘাত হইতে
ঊত্তীর্ণ হইবে।।
নারীর নীতি,বাণী-৭৬,পৃষ্ঠা-১১৫-১১৬।
বরণের শ্রেষ্ঠ ক্ষেত্র
এই বর্ণ ও বংশানুক্রমিতার
ভিত্তির উপর-
বোধ, বিদ্যা, চরিত্র ও ব্যবহার
যেখানে
পুষ্ট ও পবিত্র,-
সেই হইল তোমার
বরণ করিবার শ্রেষ্ঠ ক্ষেত্র,-
মনে রাখিও-
তোমার ভালোবাসা
যেখানে-যেমনভাবে
ন্যস্ত হইবে-
ফলের উদ্ভবও
তেমনতর হইবে
সন্দেহ নাই-
বুঝিয়া চলিও।
নারীর নীতি, বাণী-৭৪,পৃষ্ঠা-১১-১১২।
বরণে -বিচার
বরণ করিতে হইলেই দেখিও-
স্বামীর আদর্শ কী বা কেমন,
তাঁহার আরাধনায়
চেষ্টা ও কর্ম্মের আগুনে
তোমাকে আহুতি দিয়া সার্থক হওয়ার
প্রলোভন
তোমাকে প্রলুব্দ করে কিনা;
আর, তুমি যাহাকে বরণ করিতে চাও,
সে
তাঁহাতে কেমনতর ও কতখানি-
কারন, তুমি তাহার সহধর্ম্মিণী হইতে যাইতেছ;
ইহাতে যদি তুমি উদ্বুদ্ধ হও-
আর, জাতি,বর্ণ, বংশ, বিদ্যায়-
যদি-তোমার বরণীয় যিনি-
তিনি সর্ব্বতোভাবে
তোমা হতে শ্রেষ্ঠ হ'ন-
এবং তোমার পূর্ব্বপুরুষের অর্ঘনীয় বলিয়া
বিবেচনা কর,-
তবে-তাঁহাকে বরণ করিলে
বিপত্তির হাত হইতে
এড়াইতে পারিবে-
এটা ঠিক জানিও।
নারীর নীতি,বাণী-৭৩,পৃষ্ঠা-১০৯-১১০।
বিবাহে উদ্ধর্দ্ধন ও সুপ্রজনন
বিবাহে
মানুষের
প্রধান দুইটি কামনাকেই
পরিপূরণ করে;-
তার একটি
উদ্ধর্দ্ধন,
অন্যটি সুপ্রজনন;-
অনুপযুক্ত বিবাহে
এই দুটিকেই
খিন্ন করিয়া তোলে;
সাবধান!
বিবাহকে খেলনা ভাবিও না-
যাহাতে
তোমার জীবন
ও
জনন
জড়িত।
নারীর নীতি,বাণী-৭২, পৃষ্ঠা-১০৭-১০৮।
কল্পনাপ্রহেলিকায় স্বামী-বরণ
যে-মেয়েরা
স্বামীকে
তাহাদের কল্পনার মত করিয়া
পাইতে চায়,-
বাস্তবে উদ্বুদ্ধ হইয়া
স্বামীকে বরণ করে না,-
তাহারা
স্বামীর সহিত
যতই পরিচিত হয়,
ততই
নিরাশ হয়;-
আপসোস, দোষদৃষ্টি, জীবনে ধিক্কার ইত্যাদি
তাহাদের
পার্শ্বানুচর হইয়া
অবসাদে অবসান হয়,-
আর, সেই হতভাগ্য পুরুষেরও
শেষ নিঃশ্বাস
আমনি-করিয়াই
মরণে বিলীন হইয়া যায়;
ভুল করিও না,
অমনতর মরণকে
আমন্ত্রন করিও না।
নারীর নীতি, বাণী-৭০, পৃষ্ঠা-১০৩-১০৪।
বরণে বংশানুক্রমিতা
পুরুষ আদর্শানুরাগ
শ্রদ্ধা ও ভক্তি হইতে উৎপন্ন,-
যাঁহা হইতে প্রেরণা পাইয়া,
কর্ম্মানুষ্ঠান করিয়া,
সেবা করিয়া-
যে-বোধ ও জানার উৎপত্তি হয়,
তাহা সন্তানের মূলগত ধাতুতে সংক্রামিত হইয়া
যে-স্বভাবের সৃষ্টি হয়,
তাহাই তাহার
আদিম সংস্কার;
তাহার এই সংস্কারই
তাহার পারিপার্শ্বিক হইতে
বাঞ্চিত উপকরন সংগ্রহ করিয়া
বিবর্দ্ধিত হইয়া
মানুষ হইয়া দাঁড়ায়;-
তবেই, মানুষের উন্নতির মূল উপদানই হইতেছে
পুরুষপরম্পরাগত আদর্শানুরাগ হইতে উদ্ভূত
এই বংশানুক্রমিতা( cultural heredity);
ইহা যেখানে শ্রেষ্ঠ-
বরণ-ব্যাপারে তাহাই অগ্রগন্য ও আদরণীয়;
মনে রাখিও-
এই বর্ণ ও বংশকে তাচ্ছিল্য করিলে
সবংশে যে তুমি মরণযাত্রী হইবে
সে-সম্বন্ধে আর ভুল কোথায়?
নারীর নীতি, বাণী -৭১,পৃষ্ঠা-১০৫-১০৬।
বরণে-শ্রেষ্ঠে নিকৃষ্টতায়
শ্রেষ্ঠে বংশানুক্রমতা (heredity)- সত্ত্বেও-
এমন-কি বিদ্যা-ব্যবহারে শ্রেষ্ঠ থাকিয়াও
যদি কেহ হীন চিন্তা ও কর্ম্মানুষ্ঠানী হয়,
আর, তাহা কোন উচ্চ-আদর্শকে
বহন ও প্রতিষ্ঠা না করিয়া
স্বার্থকেই পরিপুষ্ট করে,-
এমনতর স্থলে
শ্রেষ্ঠ হইলেও নিকৃষ্ট
বলিয়াই পরিগনিত হইবে-
তুমি
বরণ-ব্যাপারে ইহা হইতে দূরে থাকিও,-
ইহাও
শ্রেষ্ঠ বংশানুক্রমিতাকে
অপঘাত করিয়া
নিকৃষ্ঠকে নিমন্ত্রন করে।
নারীর নীতি, বাণী-১১৩,পৃষ্ঠা-১৭২।
বর বরণে-অসংস্রব
যদি উপযুক্ত স্বামী লাভ করিতে চাও-
পুরুষ হইতে দূরে থাকিও-
কাহাকেও
স্বামীভাবে
কল্পনা করিও না,-
কারন,
ইহাতে
মন
কামলোলুপ হইয়া
তোমার দৃষ্টিকে
অস্বচ্ছ করিয়া তুলিবে;
-কিন্তু যাঁহাকে স্বামী করিতে চাও
তাঁহার ইষ্ট, আচার, বংশ, যশ, স্বাস্থ্য,
শ্রদ্ধা,জ্ঞান ইত্যাদি
কাম্য, সহনীয় ও বহনীয় কিনা-
অবলোকন করিও
এবং
মঙ্গালাকাঙ্ক্ষী গুরুজনের সহিত
আলোচনা করিও
প্রাপ্তিতে ভ্রান্তি
কমই ঘটিবে ।
নারীর নীতি, বাণী-৬৬,পৃষ্ঠা-৯৬-৯৭।
অনুলোমে পূন্য-প্রতিলোমে পাপ
অনুলোম-
জীবন ও বৃদ্ধিকে
ক্রমোন্নয়নে অধিরূঢ় করে বলিয়া
তাহা ধর্ম ও পূণ্যের প্রসবিতা;
আর, প্রতিলোম-সংসর্গ
জাতির বংশানুক্রমিক অর্জ্জিত অভিজ্ঞতা
ও
ব্যক্তিত্বের অপঘাত ঘটাইয়া-
হীনত্বে সংবর্দ্ধিত ও পরিচালিত করিয়া
মূর্ত্ত করে বলিয়া-
তাহা
অধর্ম্ম,হীনতা ও পাপেরই
জননী ।
নারীর নীতি, বাণী-১১৪,পৃষ্ঠা-১৭৩।
নারীতে পূর্ব্বপুরুষ
গর্ব্বের সহিত স্মরণ করিও-
তোমাতে যে জীবন প্রবাহিত হইতেছে,
তাহা তোমারে
পূর্ব্ব-পূর্ব্ব পুরুষদিগকে বহন করিয়া;-
যাঁহাকে অর্ঘ্য দিয়া
তোমার পূর্ব্ব-পূর্ব্ব পুরুষ
প্রীত ও ফুল্ল হ'ন মনে কর,-
যাঁহার বা যে-বংশের চরণস্পর্শে
তাঁহারা ধন্য হ'ন মনে কর,-
তুমি
নতজানু হইয়া
তাঁহারই চরণে অবনত হইও,-
তাঁহাকেই বরণ করিও,-
'স্বামী'-সম্বোধন তাঁহাকেই করিও;-
আর, তোমার এই চিন্তা
ও সম্বোধনের ভিতর-দিয়া
উৎফুল্লকন্ঠে তোমার পূর্ব্বপুরুষগনও
মঙ্গল বর্ষণ করিবেন;
নিন্দিত হইও না,
তাঁহাদিগকে বেদনাপ্লুত করিও না,
উদ্বুদ্ধ হও-উজ্জ্বল হও,-
বংশ ও জাতিকে উন্নত কর।
নারীর নীতি, বাণী-৬৯,পৃষ্ঠা-১০১-১০২।
৩) বৈবাহিক জীবনঃ